লখনউয়ের আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান শুনতে হল নরেন্দ্র মোদীকে। শুক্রবার সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী ভাষণ শুরু করতে যাওয়া মাত্র কয়েকজন ছাত্র স্লোগান দিতে শুরু করেন। ‘মোদী গো ব্যাক’, ‘মোদী মুর্দাবাদ’, ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান শোনা যায়। প্রায় দশ সেকেন্ড চুপ থাকার পর ভাষণ শুরু করেন মোদী। ততক্ষণে নিরাপত্তারক্ষীরা স্লোগানরত ছাত্রদের ঘিরে ফেলে মুখ বন্ধ করে বাইরে নিয়ে যেতে শুরু করেছেন।
স্লোগান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর মোদি যখন বলা শুরু করেন, তখন হায়দরাবাদের ছাত্র রোহিত ভেমুলার কথা বলতে গিয়ে দৃশ্যতই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। বলেন, আমারই দেশের এক যুবক যখন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন বলে শুনি, তখন তাঁর পরিবারকে কী পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হল। ভারত মাতা এক সন্তানকে হারাল। এর পিছনে কারণ থাকতে পারে। এ নিয়ে রাজনীতিও হবে। কিন্তু সব শেষে এটাই বাস্তব যে, এক মা তাঁর সন্তানকে খোয়ালেন। আমি তাঁর যন্ত্রণা খুব উপলব্ধি করতে পারি।
জানা গিয়েছে, মোদীকে বিক্ষোভ দেখানো, স্লোগান দেওয়ার জন্য রাম করণ ও ভুবনেশ আর্য নামে দুজনকে ছাত্রকে পুলিশ বাইরে বের করে নিয়ে যায়। তাদের আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভ, স্লোগানের ঘটনায় হতবাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর কমল জয়সওয়াল বলেছেন, আমরা হতবাক হয়ে যাই। যাবতীয় শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। নিয়ম অনুসারে পদক্ষেপ করা হবে। ঘটনাচক্রে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথমবার মোদীকে কোনও অনুষ্ঠানে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল।
এদিনের ৩৫ মিনিটের ভাষণে বারবার আম্বেদকরের কথা বলতে শোনা যায় মোদীকে। তাঁর সরকার দলিত, গরিব, অত্যাচারিতদের উন্নয়নে দায়বদ্ধ বলে জানান।
হায়দরাবাদের সাতাশ বছরের রিসার্চ স্কলার রোহিতের আত্মহত্যার ঘটনায় সরাসরি এফআইআরে নাম রয়েছে মোদীর নিজেরই মন্ত্রিসভার সদস্য বন্দারু দত্তাত্রেয়র। মোদীর আরেক মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রকের বিরুদ্ধেও রোহিতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে এই দলিত মেধাবী ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে মোদী সরকার। আর সেই প্রেক্ষাপটেই রোহিতের কথা বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, সত্যিই যদি মোদী রোহিতের মৃত্যুতে দুঃখিত হন, তাহলে বন্দারু এবং স্মৃতিকে বরখাস্ত করছেন না কেন? এবিপি।