ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল কাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার সকাল ১১টা ১৬ মিনিটে নাওডোবায় নবনির্মিত হেলিপ্যাডে এসে পৌঁছায় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার। হেলিকপ্টার থেকে নেমেই মঞ্চের পাশে অবস্থিত একটি ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল কাজ নদীশাসন কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর মোনাজাতে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সফলতা কামনা করেন তিনি। ফলক উন্মোচনের পর পাশেই অবস্থিত সুধী সমাবেশের মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সকাল পৌনে ১০টার দিকে হেলিকপ্টারেযোগে তাঁর জাজিরায় পৌঁছানোর কথা থাকলেও কুয়াশার কারণে তা বিলম্বিত হয়। এক ঘণ্টা পর নাওডোবা মৌজায় হেলিপ্যাডে নামার পর কয়েক শ গজ দূরে ফলক উন্মোচন করে তিনি নদীশাসন কাজের উদ্বোধন করেন। জাজিরায় একটি সুধী সমাবেশেও বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর নৌপথে যাবেন মাওয়ায়। মাওয়ায় যাওয়ার পথে নদীর মধ্যে সাত নম্বর পিলারের পাইলিং কাজের জায়গাটিও দেখবেন তিনি। সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ওই ৭ নম্বর পিলারের মাধ্যমেই শুরু হবে মূল কাজ। দুপুরের পর মাওয়ায় এক জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
২০১৮ সালের মধ্যে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। নিজস্ব অর্থায়নে এটি এ পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এর জন্য খরচ হবে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। এ প্রকল্পের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ নদীশাসনের এই কাজটি করবে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন; ব্যয় হবে ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এই সেতু হলে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হবে দক্ষিণাঞ্চল। এই সেতুতে ট্রেনও চলবে। এশিয়ান হাইওয়ের পথ হিসেবেও সেতুটি ব্যবহৃত হবে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধিও বাড়বে। পদ্মা সেতু ঘিরে হংকংয়ের আদলে নগর গড়ার পরিকল্পনার কথাও বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। মাওয়া থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত চার লেনের সড়ক হবে। রাজধানীর বিজয়নগর থেকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে হবে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়ালসড়ক।