[ads1]পাকিস্তানের নাম না করে ভারতে সংঘঠিত বিভিন্ন জঙ্গি হামলার জন্য দেশটিকে দায়ী করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেছেন, ‘ভারতের স্থিতাবস্থা নষ্ট করার চক্রান্ত করছে প্রতিবেশী দেশ।’ থেমে থাকেননি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুও। তার দাবি, ‘ভারতে অশান্তি তৈরি করতেই ইচ্ছাকৃতভাবে এই আক্রমণ করানো হয়েছে।’
গুলি চালানোর প্রশিক্ষণ শেষে শনিবার দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জাতীয় সড়কের উপর সশস্ত্র জঙ্গিদের অতর্কিত আক্রমণে আট সিআরপিএফ সদস্য নিহত হন। ঘটনার পরই ট্যুইট করে শোকপ্রকাশ করেন রাজনাথ। বলেন, ‘নিহত সিআরপিএফ জওয়ানদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’
আর রোববার পাঞ্জাবের ফতেগড় সাহিবে প্রখ্যাত শিখ যোদ্ধা বাবা বান্দা সিং বাহাদুরের ৩০০তম শহিদ দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতকে অশান্ত করে তোলার প্রয়াস চালিয়েছে জঙ্গিরা। আমাদের প্রতিবেশী দেশও তাতে সরাসরি ইন্ধন জোগাচ্ছে। এই সময় আমাদের দেশের তরুণ এবং যুবক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। ভারতের স্থিতাবস্থা যাতে নষ্ট না হয়, সেজন্য নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের একযোগে কাজ করতে হবে।’
[ads2]ওই অনুষ্ঠানেই নিহত জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাজনাথ বলেন, ‘দুই জঙ্গিকে আপনারা খতম করেছেন দেশকে বাঁচানোর জন্য। আপনারা আজ আমাদের সঙ্গে নেই ঠিকই, কিন্তু আপনাদের আত্মবলিদান দেশ কখনো ভুলবে না।’ এর সঙ্গেই রাজনাথ জানিয়ে দেন, জঙ্গি হামলা ঠেকাতে বাহিনীর পদ্ধতিগত কোনো ত্রুটি ছিল কি না, তা জানতে দুই সদস্যের দল যাবে ঘটনাস্থলে। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবকে বলেছি, দুই সদস্যের দল ঘটনাস্থলে পাঠাতে। তারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে দেখুক, আমাদের তরফে কোনো গাফিলতি ছিল না। যদি থেকে থাকে, তবে তা কীভাবে শুধরে নেয়া সম্ভব, যাতে ভবিষ্যতে কোনো জওয়ানকে নিহত হতে না হয়।’
এর খানিক পরেই সিআরপিএফের ডিরেক্টর জেনারেল কে দুর্গা প্রসাদ সংবাদ সংস্থাকে জানান, ‘মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা থেকে বেশকিছু মাইনরোধী গাড়ি (এমপিভি) কাশ্মীরে নিয়ে আসা হচ্ছে।’ কারণ হিসাবে তিনি বলেন, ‘মাওবাদীরা মূলত আইইডি’র মাধ্যমে জওয়ানদের কনভয়কে টার্গেট করত। কিন্তু কনভয়ের সামনে এমপিভি আনার পর থেকে তাদের সেই পরিকল্পনা ভণ্ডুল হয়ে যায়। গতকালের হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের মনে হয়েছে, এবার এগুলি কাশ্মীরেও কাজে লাগবে। কারণ, যেভাবে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়েছে জঙ্গিরা, তাতে এমপিভি থেকে প্রত্যুত্তর দেয়া সহজ হত। তাই ঠিক করা হয়েছে, এবার থেকে কাশ্মীরের কনভয়ের সামনে এমপিভি থাকবে। আপাতত কিছু সংখ্যক আনা হচ্ছে, প্রয়োজনে আরও এই ধরনের গাড়ি আনা হবে।’
এই হামলার ঘটনায় রাজনাথ যেভাবে নাম না করে পাকিস্তানকে দায়ী করেছেন, ঠিক একই রাস্তায় হেঁটেছেন তার ডেপুটিও। বিশেষ করে পাকিস্তান হাইকমিশনার আবদুল বাসিত আট জওয়ানের মৃত্যুর থেকে ইফতার পার্টিকে বেশি গুরুত্ব দেয়ায়। বাসিত মন্তব্য করেছিলেন, ‘কাশ্মীর হচ্ছে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বিতর্কিত একটা ইস্যু। এটা আলোচনার মাধ্যমেই সম্ভব। তাই হামলার ঘটনা নিয়ে বেশি মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। বরং ইফতার পার্টি উপভোগ করুন।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রিজিজু বলেন, ‘ওরকম উলটোপালটা মন্তব্য করাই ওর কাজ। যদিও পুরো ঘটনা দেখেছে গোটা বিশ্ব। আর এই হামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঘটানো হয়েছে, যাতে ভারতের স্থিতাবস্থা, ভারসাম্য নষ্ট হয়।’
একই সুরে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেন, ‘এটা রমজান মাস চলছে। লোকে আল্লাহর দোয়া পেতে দিনরাত পরিশ্রম করছেন। সেখানে এই ধরনের ঘটনা নিন্দনীয়। কী পেল জঙ্গিরা! শুধুমাত্র কয়েকটি ঘরের উপার্জনকারীর জীবন চলে গেল। তাদের পরিবারগুলি অসহায় হয়ে গেল। এসব বন্ধ করতে না পারলে আমাদের রাজ্যেরই বদনাম হবে।’[ads1]