‘বয়স্ক লোকদের কারোরই জন্ম তারিখ ঠিক নেই। আমার নিজেরটাও ঠিক নেই। আমার জন্ম ১৯২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি, অথচ সার্টিফিকেটে আমার জন্ম তারিখ হচ্ছে ১ জুন।’ -এই মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমার ধারণা, আমার মতো বয়সী যাঁরা আছেন, তাদের সবারই জন্ম তারিখ একেক জায়গায় একেক রকম।’
বেতন ও পেনশনের টাকা উত্তলনের সময় সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরাজমান হয়রানি ও জটিলতা দূর করতে অর্থমন্ত্রণালয় অনলাইন পদ্ধতি প্রবর্তন করেছে। অর্থমন্ত্রী নতুন এ পদ্ধতির সুবিধাগুলো ব্যাখ্যা করে বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনলাইনে প্রবেশ করে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর টিপেই যেকোনো পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী তাঁর বেতন ও পেনশনের টাকার পরিমাণ ও উত্তলনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে সহজেই জানতে পারবেন। প্রশাসনের ইতিহাসে ২৬৮ বছরের মধ্যে এটিই হচ্ছে সর্বাধুনিক পদ্ধতি।
অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সূত্র ধরে একজন সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল- ‘অনেকের জাতীয় পরিচয়ত্রে নম্বর, জম্ম তারিখ, পিতার নাম, মাতার নাম, ঠিকানাসহ বিভিন্ন ধরনের ভুল-ভ্রান্তি রয়েছে। তা ছাড়া অনেক কর্মকর্তার সার্টিফিকেট ও জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখিত তারিখের মধ্যে গরমিল রয়েছে। এসব জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে অনলাইনে প্রবেশ করে বেতন ও পেনশনের অর্থ নিরূপণ ও উত্তোলন করা যাবে কি?’
জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি ঠিকই বলেছেন। আমাদের জন্ম তারিখ একেক জায়গায় একেকটা। বিশেষ করে আমার মতো বয়সী যাঁরা তাঁদের তো আর কথাই নাই। আমার নিজের জন্ম তারিখের সঙ্গেই তো সার্টিফিকেটের জন্ম তারিখের মিল নেই।’
শৈশব আর কৈশোর জীবনের রোমন্থন করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জন্মের সময় তারিখ লিখে রাখার রেওয়াজ ছিল না। বড়রা আমাদের ধরে স্কুলে নিয়ে গেছেন আর হেড স্যার ভর্তি করিয়ে নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় কেরানি স্যার একটা জন্ম তারিখ লিখে দিয়েছেন, ব্যাস হয়ে গেছে। কোনো কোনো ফরমে জন্ম তারিখের কথাই ছিল না। কোথাও হয়তো বয়স লিখতে হতো। আবার কোথাও বয়স লেখারও ঘর ছিল না।’
প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ নিজের জন্ম তারিখ বিষয়ে আরো বলেন, ‘আমার জন্ম তারিখটা ঠিক করার জন্য আমি এফিডেভিট করে একবার বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলাম। বোর্ড চেয়ারম্যান ছিলেন সম্পর্কে আমার চাচা। তিনি বললেন, তোমার আগে আরো একজন তার জন্ম তারিখ ঠিক করতে এসেছিল।’
কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর জাতীয় পরিচয়পত্র ভুল থাকলে তা সংশোধন করে নেওয়ারও পরামর্শ দেন অর্থমন্ত্রী।