সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা গ্রান্ড মুফতি শেইখ আবদুল আজিজ বিন-আব্দুল্লাহ আল-শেইখ ফতোয়া দিয়েছেন দাবা খেলা ‘শত্রুতা ও ঘৃণার’ জন্ম দেয় তাই মুসলিমদের জন্য দাবা খেলা হারাম। সাপ্তাহিক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তরে এই ফতোয়া দেন সৌদির গ্র্যান্ড মুফতির বলে বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন।
ইসলামপূর্ব আরবের খেলা ‘মাইসির’-এর সঙ্গে দাবার তুলনা করে তিনি বলেন, ‘দাবা খেলা সময়ের অপচয় এবং এটা টাকা অপব্যয়ের একটি পন্থা। এটা মানুষের মধ্যে শত্রুতা ও ঘৃণার জন্ম দেয়’।
ইন্ডিপেনডেন্টের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার ওই ফতোয়ায় সৌদি আরবে দাবা খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি না হলেও দেশটিতে এ নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে।
সৌদি চেস অ্যাসোসিয়েশনের ‘ল’ কমিটির সভাপতি মুসা বিন থাইলি বলেন, নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী শুক্রবার মক্কায় দাবা টুর্নামেন্ট শুরু হবে।
‘দাবাকে জনপ্রিয় করে তুলতে সৌদি চেস অ্যাসোসিয়শন অনেক কাজ করেছে এবং যদি শক্তি প্রয়োগ করা না হয় তাহলে সব জায়গায় দাবা খেলার আয়োজন অব্যাহত রাখা হবে।’
তবে ওই সব খেলা বাতিল বা তাতে বাধ সাধতে কর্তৃপক্ষ এই ফতোয়াকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে ইরাকের সর্বোচ্চ শিয়া নেতা গ্রান্ড আয়াতোল্লাহ আলী আল-সিস্তানি ‘সব ধরনের’ দাবা খেলা নিষিদ্ধ করে ফতোয়া দিয়েছিলেন। তা বাস্তবে বোর্ড ও ঘুটিতে বা কম্পিউটারে যেখানেই খেলা হোক না কেন এবং খেলা নিয়ে কোনো বাজি না থাকলেও।
বিশ্বজুড়ে অন্যতম জনপ্রিয় খেলা দাবা বুদ্ধির খেলা হিসেবে পরিচিত। গত শতাব্দীতে দাবা খেলায় কম্পিউটারের ব্যবহার একে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাচীন ভারতে প্রথম দাবা খেলা চালু হয়। সে সময় এই খেলার নাম ছিল চতুরঙ্গ (‘চতু’ মানে ‘চার’ এবং ‘অঙ্গ’ মানে ‘অংশ’)। তখন দাবায় হাতি, ঘোড়া, রথ ও পদাতিক সৈন্য- এই চারটির ব্যবহার থেকে এই বলে ধারণা করা হয়।
পারস্য বণিকদের হাত ধরে এই খেলা এক সময় ইরানে যায়। সেখান থেকে ধীরে ধীরে দাবা খেলা বিভিন্ন মুসলিম দেশে ছড়িয়ে পড়ে।