লিবিয়ায় এগারোটি বিমান বিদ্রোহীদের দখলে, ৯/১১-র ধাঁচে হামলার আশঙ্কা

0

image_96900_0ওয়াশিংটন: ত্রিপোলি বিমানবন্দর থেকে উধাও ১১টি বিমান!

সন্দেহ আগেই ছিল, তা-ও  বিমান চুরির দায় স্বীকার করে ফেসবুক-টুইটারে ফলাও করে পোস্ট করা হলো হারানো বিমানের পাশে দাঁড়ানো বিদ্রোহীদের উল্লাসের ছবি! অস্ত্র হাতে বিমানের ডানার ওপর দাঁড়িয়ে রীতিমতো ‘পোজ’ দিয়েছে তারা। কেউ আবার জয়ের উচ্ছ্বাস চাপতে না পেরে দু’হাত তুলে নাচানাচি করছে। তামাম বিশ্বের সদস্য-সমর্থকদের কাছে নিজেদের এই ছবি প্রকাশ করে ‘সাফল্য’ জাহির করতেও ভোলেনি ‘লিবিয়ান ডন’ নামে আল কায়দার শরিক ওই বিদ্রোহীগোষ্ঠী।

বিমান দখলের এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন আমেরিকা। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের আধিকারিকদের আশঙ্কা, লিবিয়া থেকে দখল করা ওই বিমান নিয়ে তেরো বছর আগের ৯/১১-র ধাঁচে হামলার পরিকল্পনা করছে বিদ্রোহীরা।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওসামা বিন লাদেনের পরিকল্পনায় ওয়াশিংটন ডিসি-র পেন্টাগন এবং নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে মারণ হামলা চালায় আল কায়দা। দু’বছর আগে এই দিনেই লিবিয়ার বেনগাজিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফার স্টিভেনসের বাসভবনে হামলা করে তাকে হত্যা করেছিল বিদ্রোহীরা। গত কয়েক মাস ধরে সিরিয়া ও ইরাকে বিদ্রোহী নিধনে আমেরিকা তৎপর হওয়ার পর থেকেই বদলা নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে আইএসআইএস (ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া)।  সম্প্রতি এক আল কায়দা নেতাকে মারতে  দক্ষিণ সোমালিয়ায় বিমান হামলাও চালায় মার্কিন সেনা। দুই মার্কিন সাংবাদিকের মুণ্ডচ্ছেদ করে তার ভিডিও প্রকাশ  করেছে বিদ্রোহীরা।

৯/১১-র তেরো বছর পূর্তিতে বিদ্রোহীরা যে নতুন করে অস্ত্রে শান দেবে তা আঁচ করেই দু’সপ্তাহ ধরে লিবিয়ার প্রশাসনকে সতর্কবার্তা দিয়েছিল আমেরিকা। চলতি বছরের আগস্টে ত্রিপোলির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি দখল করে লিবিয়ান ডন। রাজধানী ত্রিপোলি সর্বৈব ভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে বলে গত রবিবার ঘোষণা করে লিবিয়া প্রশাসন। জানানো হয়, ডন এবং আইএসআইএস-এর শরিক বিদ্রোহীগোষ্ঠী আনসার আল-শারিয়ার হাতেই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে দেশের রাজধানী। সেই বিবৃতিতেই বিমান লোপাটের কথাও জানানো হয়।

মার্কিন প্রশাসনের আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা জানিয়ে আল জাজিরাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মরক্কোর সেনা বিশেষজ্ঞ আবদুর রহমান মেক্কাউই বলেন, “বিদ্রোহীরা যে ফন্দি আঁটছে সেটা পরিষ্কার। তবে গোয়েন্দা সূত্রে যা খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে দখল করা বিমান ইতিমধ্যেই অন্য একটি বিদ্রোহীগোষ্ঠীকে হস্তান্তর করেছে ডন। তারা কারা, তা বলা যাচ্ছে না। তবে মাস্কড মেন ব্রিগেডের কাছে ওই বিমানগুলি থাকতে আছে। হামলার আশঙ্কা প্রবল আরবের তেলসমৃদ্ধ এলাকাগুলিতে।”

আর এক বিদ্রোহী বিশেষজ্ঞ সেবাস্টিয়ান গোরকার মতে, দু’ভাবে হামলা চালাতে পারে বিদ্রোহীরা। এক, একেবারে ৯/১১ ধাঁচে যাত্রিবাহী বিমানকে ক্ষেপণাস্ত্রে পরিণত করবে। দুই, ফাঁকা বিমানে বিদ্রোহীদের নিয়ে এমন কোনো জায়গায় পৌঁছে নাশকতা চালাতে পারে যা তাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে।”

আমেরিকার তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিমান লোপাট নিয়ে কোনো মন্তব্য না করা হলেও সূত্রের খবর, বিমানের সন্ধান চালাতে শুরু করেছে প্রতিরক্ষা দফতর। প্রসঙ্গত, গাদ্দাফি গদিচ্যুত করার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়েছে লিবিয়া। এই পরিস্থিতিতে সিরিয়া বা ইরাকের মতো লিবিয়াও যাতে জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত না হতে পারে সে দিকেও
নজর দিচ্ছে আমেরিকা। – ওয়েবসাইট।           

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More