ঘটনাটি ভারতের উত্তর প্রদেশের। চার মেয়ে ও এক ছেলের বাবা ৮৫ বছর বয়সী নাথু সিং। স্ত্রী মারা গেছেন। বর্তমানে একাকীত্বই তার সঙ্গী। গ্রামের বৃদ্ধাশ্রমে দিন কাটে তার। ছেলেমেয়েরা কেউ আসেন না, দেখেনও না। পরিবার থাকা সত্ত্বেও কেউ নেই- এমন এক কঠিন সময়ে নাথু সিং রাগের বশবর্তী হয়ে নিজের কোটি টাকার সম্পত্তি সরকারকে দিয়েছেন।
ওই রাজ্যের মুজাফ্ফরনগরের বাসিন্দা নাথু সিংয়ের করুণ কাহিনী অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে।৮৫ বছর বয়সী নাথু সিং তার দেহ দান করেছেন এক স্থানীয় মেডিকেল কলেজে। নাথু সিংয়ের রয়েছে একটি বাড়ি। সম্পত্তির পরিমাণ ১.৫ কোটি টাকা। তবে নেই কোনো ‘কাছের মানুষ’। নাথু সিংয়ের ছেলে সাহারানপুরের এক স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক। তার চার মেয়েই বিবাহিত। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাথু সিং জানান, তার পরিবারের কেউ তার সঙ্গে দেখা করেন না। তিনি বলেন, ‘এই বয়সে আমি আমার ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে থাকার কথা। তবে তারা আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে না। আর সে কারণেই আমি মনস্থির করে নিয়েছি সম্পত্তি নিয়ে।’নাথু সিং ‘উইল’ করে সম্পত্তি দান করেছেন রাজ্য সরকারকে।
তার মৃত্যুর পর যাতে উত্তরপ্রদেশ সরকার নাথু সিংয়ের সম্পত্তি পায় তা ‘উইলে’ জানিয়েছেন তিনি। যোগী সরকারের কাছে এই অশীতিপর বৃদ্ধ আবেদন জানান, তার মৃত্যুর পর তার সম্পত্তির টাকায় যেন কোনো স্কুল বা হাসপাতাল গড়া হয়। তিনি চান, তার দেহ কোনো মেডিকেল পরীক্ষা বা গবেষণার কাজে লাগানো হোক তার মৃত্যুর পর। সেই আকাঙ্ক্ষা থেকে তিনি আগাম দেহদানেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।যে বৃদ্ধাশ্রমে নাথু সিং থাকেন, সেখানের ম্যানেজার রেখা সিং জানান, ছয় মাস আগে নাথু সেই বৃদ্ধাশ্রমে গেছেন। তারপর থেকে তাকে দেখতে কেউ আসেনি সেখানে। জানা গেছে, সেই ঘটনার পর থেকে নাথু সিং খুবই অবসাদে ভুগতে থাকেন। তারপর থেকেই এই কঠিন সিদ্ধান্ত নাথু সিং নিয়েছেন বলে জানান তার বৃদ্ধাশ্রমের ম্যানেজার। সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে ও আনন্দবাজার পত্রিকা।
বিডি-প্রতিদিন