ঢাকা: ধরুন, আগের সব পরীক্ষায় আপনি পেয়েছেন সর্বোচ্চ নম্বর। কিন্তু ফাইনালে আপনি পেলেন সব বিষয়ে শূন্য। তখন কী অবস্থা হবে আপনার!
এমন একটি ঘটনা ঘটেছে মিশরে। সেখানে মরিয়ম মালেক নামে এক তুখোর ছাত্রী সাত বিষয়ে শূন্য পেয়েছে। হাইস্কুলের শেষ পরীক্ষায় এমনটি হয়েছে তার।
মেধাবী ছাত্রী হিসেবে পরীক্ষার ফল দেখতে গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই তালিকার উপরের দিকেই চোখ ছিল মরিয়ম মালেকের। কিন্তু শীর্ষস্থান অধিকারীদের মধ্যে নিজের নাম না দেখে একটু অবাকই হলো সে।
তারপরও আশা ছিল, মেডিকেল স্কুলে ভর্তির উপযুক্ত নম্বর অন্তত পাবে। কিন্তু তাতেও গুঁড়েবালি। যখন ফলের তালিকায় নিজের নাম খুঁজে পেল সে, তখন মাথা ঘুরে বসে পড়ল মাটিতে।
আগের পরীক্ষাগুলোতে সবসময় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে এসেছে মরিয়ম। মিশরের হাই স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচাইতে ভালো ছাত্রী হিসেবেই গণ্য করা হতো তাকে।
অথচ হাই স্কুলের শেষ পরীক্ষায়ই সে ফেল করলো! শুধু ফেল বললে কম হবে, কারণ যে সাতটি বিষয়ে সে পরীক্ষা দিয়েছিল, তার সবগুলোতেই শূন্য পেয়েছে সে।
এই ফলের পর ধপাস হয়ে মাটিতে বসে পড়ে মরিয়ম। তার ভাষায়, ‘আমি কানে কিছু শুনছিলাম না। মুখ থেকে কথা বের হচ্ছিল না। এটা কীভাবে সম্ভব? আমি কি করে সবগুলোতে শূন্য পেলাম?’
তবে সব বিষয়ে শূন্য পেয়ে একটি লাভ হয়েছে মরিয়মের। মরিয়ম মালেক আগে স্কুলের তারকা ছিল। এখন সব বিষয়ে শূন্য পেয়ে সে বনে গেছে জাতীয় তারকা। এমনকি তার সমর্থনে মিশরে চলছে ছাত্র বিক্ষোভ।
প্রাথমিকভাবে গুজব ছড়িয়েছিল যে মিশরের সংখ্যালঘু কপটিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্য হওয়ার কারণে মরিয়মকে ফেল করানো হয়েছে। তবে এখন তার পরিবার বিশ্বাস করে যে, মরিয়ম দুর্নীতির শিকার।
মরিয়মের ভাই বলছে, ‘হয় স্কুল কর্তৃপক্ষ নয়তো পরীক্ষা বোর্ড মরিয়মের উত্তরপত্র এমন কারো সঙ্গে বদলে দিয়েছে যার পরীক্ষা মোটেই ভালো হয়নি।’
মিশরের শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতির অভিযোগ শোনা যায় না, এমন নয়। তবে মরিয়ম মালেকের এই ঘটনা অনলাইনে বিপুল সংখ্যক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
হাজার হাজার মানুষ এখন টুইটারে ‘আই বিলিভ মরিয়ম মালেক’ নামে হ্যাশ ট্যাগ ব্যবহার করছে। তার সমর্থনে একটি ফেসবুক পাতাও চালু হয়েছে, যাতে এরই মধ্যে ত্রিশ হাজারের বেশি মানুষ লাইক দিয়েছে।