স্বল্প খরচে ঘুরে আসুন বিশ্বের আকর্ষণীয় ১০টি স্থান থেকে। যেখানে টিকেটের খরচ ছাড়া আপনার বড় ধরণের কোনো খরচ হবে না। হোটেল খরচ আর অন্যান্য ভ্রমণ খরচ নামমাত্র। হোটেল ব্যবস্থা, শহরের পরিবেশ, দর্শনীয় স্থান ও ন্যাশনাল পার্কগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন তোলোর কোনো অবকাশ নেই।
মরক্কো ও গ্রিস হয়ে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে চীন পর্যন্ত আপনি ঘুরে দেখে আসতে পারেন এইসব দর্শনীয় স্থানগেুলো। ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবহনকারী স্থানও রয়েছে এগুলোতে। এইসব স্থানে ধারণ করা হয়েছে বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র, তোলা হয়েছে চমৎকার সব ছবি এগুলোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিবরণ নিচ থেকে জেনে নিন……..
১। আইদ বেনহাদু, মরক্কো:
আইদ বেনহাদুতে রয়েছে ইউনেস্কো ঘোষিত এবং সংরক্ষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। এই শহরটি সাম্প্রতিক সময়ে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে ‘গেইম অব থ্রোনস’ সিরিয়ালটির জন্য। এর আগে পরিচিত ছিলো ‘গ্ল্যাডিয়েটর’ আর ‘কিংডম অব হেভেন’ চলচ্চিত্র চিত্রায়ণের জন্য। পর্যটকরা অভিভূত হবেন এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে। বেড়াতে গিয়ে চড়তে পারেন বাইকে, ঘুরে দেখতে পারেন শপিংমলগুলো, শহরের চূড়ায় উঠে দেখতে পারেন বিস্ময়কর সৌন্দর্য।
২। মসটার, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা:
মসটার পরিচিত তার পুরাতন টার্কিশ ব্রীজ ও বাড়িগুলোর জন্য। ইউনেস্কো মসটারের পুরাতন ব্রীজ এলাকাকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ বলে ঘোষণা করেছে। নেরেটভা নদীর তীরে অবস্থিত এই শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধকর। অনেক পর্যটক মিলহাউস রেস্টুরেন্টে এক রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য যান। প্রাকৃতিক ঝর্ণা, সমুদ্র সৈকত এবং পুরাতন গ্রিক শহরের নিদর্শনও রয়েছে মসটারের খুব কাছাকাছি।
৩। আইওস-খোরা, গ্রীস:
অনেকেই সান্তোরিনি থেকে দিনের বেলায় আইওস দেখতে যায় এবং মনোরম শান্ত ঘর আর নীল ছাদ দেখে ফিরে আসে। দিনের বেলায় এটি এজিয়ান সাগরের একটি দ্বীপ, যাতে সাদা বালু তটে নীল সমুদ্র জলের ঢেউ খেলে আর রাতে খোরা বন্দরে জমে ওঠে কাপড় আর জুয়েলারি দোকানের উজ্জ্বল বাতিগুলো। আর রেস্টুরেন্টগুলোতে চলে বাহারি খাবার-দাবার।
৪। মারজুওগা, মরক্কো:
১০টি স্থানের মাঝে এটি মরক্কোর দ্বিতীয় স্থান। আইদ বেনহাদু থেকে এটি কম এক্সেসিবল। এর অবস্থান আলজেরিয়ান সীমান্তে সাহারা মরুভূমিতে। পর্যটকরা সাধারণত ‘আর্গ ছাবি’ ভ্রমণে যান, এটি ৩৫০ মিটার উঁচু ও ৫০ কিলোমিটার প্রশস্ত একটি বালিয়াড়ি। লোকেরা উটে চড়ে সেখানে সূর্যাস্ত দেখতে যায়। শুনে ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীত আর রাতে সহস্র কোটি তারার আকাশের নীচে ঘুমাতে যায়।
৫। ভক্তপুর, নেপাল:
নেপালের সাবেক এ রাজধানী বর্তমান রাজধানী কাঠমাণ্ডু থেকে ১২ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এ শহরের আদিবাসী নেয়ারি সম্প্রদায়ের জীবনধারা প্রাগৈতিহাসিক যুগের অনুভূতি দেয়। পর্যটকরা উন্নত সংস্কৃতি, বর্ণাঢ্য উৎসব, ঐতিহ্যবাহী নাচ দেখে মুগ্ধ হয়। শুধু তাই না রয়েছে প্রাচীনকালে স্মৃতিধারা মন্দির। চ্যাঙ্গু নারায়ণ কাঠমাণ্ডুর সবচেয়ে পুরাতন মন্দির ১৭০০ মিটার উঁচুতে দাঁড়িয়ে আছে, যা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকাবদ্ধ।
৬। মেগালো পাপিগো, গ্রিস:
আইওস থেকে বহুদূরে অবস্থিত হলেও প্রায় একই রকম সুন্দর মেগালো পাপিগো মাউন্ট তিম্ফির সবোর্চ্চ চূড়ায় অবস্থিত। গ্রামের পাথুরে সরুপথ, নদীর উপর দীর্ঘ সেতু, পবর্তারোহনের ব্যবস্থা আর নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষণ করবে। আপনিও কাটিয়ে আসতে পারেন সেখানে আপনার অবসর।
৭। সুক্রে, বলিভিয়া:
সরকারিভাবে বলিভিয়ার রাজধানী সুক্রে। এখানে আছে বরফাবৃত বহু পর্বতশৃঙ্গ, আর দেশটির উন্মুক্ত মালভূমির উপর দিয়ে বয়ে যায় দুরন্ত হাওয়া। পর্বতমালার পূর্বে রয়েছে সবুজ তৃণভূমি এবং তারও নিম্নে আছে ক্রান্তীয় বনাঞ্চল। বলিভিয়ার বেশিরভাগ লোক আন্দেস পর্বতমালার দুইটি পর্বতশ্রেণীর মাঝখানে অবস্থিত একটি মালভূমিতে বাস করেন। দেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা জুড়ে আন্দেস পর্বতমালা অবস্থিত। ১৮২৫ সালে স্বাধীন হওয়া দেশটির স্থাপত্যকলা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে মোহিত করবে।
৮। পিংগিয়াও, চীন:
পিংগিয়াও চীনের শ্রেষ্ঠ প্রাচীন শহর। পুরনো দিনের সিনেমায় দেখানো খোয়া বাঁধানো রাস্তা, লাল লণ্ঠন, মন্দির এবং রাজবংশের সংরক্ষিত ভবন দর্শকদের মুগ্ধ করে। চীনাদের প্রিয় এ শহর তাদের পুরনো ঐতিহ্য সংরক্ষণ করে এখনো গর্বের সাথে দাঁড়িয়ে আছে। চীনের বুকে এটি শান্তির একটি আবাসিক শহর।
৯। পেনেদা জিরিস, পর্তুগাল:
পেনেদা-জিরিস পর্তুগালের এক মাত্র জাতীয় উদ্যান। পার্কটিতে আছে স্বচ্ছজলের হ্রদ, চমৎকার উপত্যকা আর সারি বাঁধা ওক এবং পাইনের বন হৃদয়গ্রাহী পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। পার্কের আশেপাশে চোখে পড়বে দ্বাদশ শতকের গ্রাম। যার এখনো রয়েছে গ্রাম্যপথ, গরু, কামার দোকান, ঐতিহ্যবাদী পোশাকে মেয়ে মেষপালকদের। অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকরা পাহাড়ে চড়তে পারেন অথবা, ভেলা ভাসিয়ে দিতে পারেন হ্রদের জলে।
১০। ইয়াংসু, চীন:
আমাদের সেরা দশ স্থানের চীনের দ্বিতীয় শহর ইয়াংসু। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার ইয়াংসু। লি নদীর তীরে চমৎকার এ শহর পর্যটনের জন্য সুখ্যাতি প্রাপ্ত। ইয়াংসুতে আছে পাহাড়, চড়তে পারেন পাহাড়ে। রয়েছে নদী, ভাসিয়ে দিতে পারেন ভেলা। এইসব কিছু করতে না চাইলে দেখতে পারেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।