গত এক বছরের বেশি সময় স্বাভাবিক থাকলেও হঠাৎ করেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। রাজধানীর দারুস সালাম থানাধীন গাবতলীতে পুলিশের এএসআই ইব্রাহিম মোল্লা হত্যা ও পবিত্র আশুরা উপলক্ষে পুরান ঢাকার হোসেইনী দালানের সামনে শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে বোমা হামলা, ছয়দিনের ব্যবধানে দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ড এবং আইএসআইএস জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এ দলটির নেতাকর্মীরা।
দলের নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আসার পর থেকেই তাদের নেতাকর্মীরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এর পরবর্তীকালে দলটির অভিযোগ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রতিদিনই শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করছে। তাদের অভিযোগ মতে, প্রায় লক্ষাধিক নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছে।
বিভিন্ন সময় এ দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেক নেতা সাত বছরে সাতদিনও তাদের ঘরে ঘুমাতে পারেননি। প্রতিদিনই দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হতো তাদের নেতা কর্মীদেরকে আটক, মামলা, হামলা করা হচ্ছে।
সাত বছরের বেশি সময় এ দলটি তাদের কেন্দ্রীয় অফিসের তালাও খুলতে পারেনি। দেখা গেছে গত এক বছরের কিছু কম সময় ধরে তারা প্রতিনিয়ত এ অভিযোগ করছে না।
হোসেইনী দালানের সামনে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে বোমা হামলা, পুলিশের এএসআই ইব্রাহিম মোল্লা হত্যার ঘটনার পর পরই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকর দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এ ঘটনার সঙ্গে জামায়াত এবং শিবির জড়িত। সরকারের এমন বক্তব্যের পর দলটির নেতা-কর্মীদের মাঝে আবারো দেখা দিয়েছে গ্রেফতার আতঙ্ক।
ইতোমধ্যে পুলিশের এএসআই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তাদের সবাই ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলে দাবি পুলিশের। যদিও জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের দাবি, এসব ঘটনার সঙ্গে জামায়াত কিংবা শিবিরের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই।
ঢাকা মহানগর জামায়াতের এক নেতৃস্থানীয় পর্যায়ের নেতা জানান, তাদের কর্মীরা ঢাকা ছাড়ছেন। ঢাকার বাইরেও চলছে গ্রেফতার আতঙ্ক। কৌশলী ভূমিকা নিয়ে চলার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে সব ধরনের হামলা ও হত্যার ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের গন্ধ পাওয়ার প্রবণতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার দলের মধ্যে কোনো পার্থক্য রাখে না।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীকে গুরুত্ব দিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নির্দেশনা দিয়ে বার্তা পাঠিয়েছে জামায়াত। এছাড়া গত দুইদিনে ১২টি প্রেস রিলিজ পাঠিয়ে দলের অবস্থান পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছে দলটি।