রংপুর: শপথ নিতে এসে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে থেকে গ্রেফতার হয়েছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাজেদুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান আবু সোলায়মান সরকার সাজা।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাদের মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার সুন্দরগঞ্জে আধাবেলার হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে ঢোকার সময় বিপুল পরিমাণ পোশাকি ও সাদা পোশাকধারী পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
এ সময় সেখানে সুন্দরগঞ্জের ছাত্রলীগ নেতারা উপস্থিত থেকে তাদের ধরিয়ে দেন। সেখান থেকে তাদের রংপুর কোতয়ালী থানায় নেয়া হয়। পরে বেলা ১০টায় তাদেরকে গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে নিয়ে যায় পুলিশ। গ্রেফতারের পর আবু সোলায়মান সাজার মোটরসাইকেলটিও নিয়ে যান ছাত্রলীগের এক নেতা।
সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃতদের নামে হত্যাসহ একাধিক মামলা থাকায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত উপজেলা চেয়ারম্যান মাজেদুর রহমান গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এবং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু সোলায়মান সরকার সাজা সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি।
প্রসঙ্গত: সোমবার পঞ্চম দফায় নির্বাচিত রংপুর বিভাগের সাতটি উপজেলার ২১ জনের শপথ অনুষ্ঠান সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয়। শপথ বাক্য পাঠ করান বিভাগীয় কমিশনার দিলওয়ার বখত।
অন্যদিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম মনজু জানান, জামিনে থাকা সত্ত্বেও অন্যায়ভাবে জামায়াত নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত।
সুন্দরগঞ্জবাসীকে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালনের আহ্বান জানান তিনি। হরতালের মধ্যেই তাদের মুক্তি দেয়া না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াত। জামায়াতের রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, রংপুর মহানগর জামায়াত আমির অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, জেলা জামায়াতের আমির এটিএম আজম খান, গাইবান্ধা জেলা জামায়াত আমির ডা. আব্দুর রহিমদ, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, সেক্রেটারি ওবায়দুল্লাহ সালাফী, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আমীর ইউনুস আলী, সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম মনজু এক যুক্ত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃতদের নামে যেসব মামলা দেয়া হয়েছিল তা সবই মিথ্যা বানোয়াট। তদুপরি তারা সমস্ত মামলায় জামিনে ছিলেন। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের শপথ অনুষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ ও সরকার দেউলিয়াত্ব প্রকাশ করেছেন। তারা গ্রেফতারকৃতদের তাদের মুক্তি ও শপথ বাস্তবায়নের আহবান জানান। নইলে বড় ধরনের আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা।