আমাদের চারপাশে পরকীয়া নামক এক ধরনের সম্পর্কের কথা শোনা যায়। যখন কোনো বিবাহিত পুরুষ বা নারী অন্য কোনো পুরুষ বা নারীর প্রেমে পড়ে তখন তাকে পরকীয়া বলা হয়। পুরুষ এবং মহিলা উভয়েই এই ধরনের সম্পর্কের জন্য দায়ী।
তবে এই ধরনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে মেয়েরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হন। তাই মেয়েদের অবশ্যই বিবাহিত পুরুষদের কাছ থেকে সাবধানে থাকতে হবে।
অনেক মেয়ে আছে যারা এসব সম্পর্কের শুরুর দিকে বলে থাকেন, ‘সে অনেক ভালো, অনেক যত্নশীল, খুবই বন্ধুসূলভ আচরণ করে আমার সাথে। জানি সে বিবাহিত, কিন্তু আমরা তো অন্যায় কিছু করছি না। কয়েকদিন দেখা করেছি কেবল মাত্র!’- এভাবেই শুরু হয় এ ধরণের সম্পর্ক গুলো। সূত্রপাতটা বন্ধুত্ব দিয়ে হলেও ধীরে ধীরে আপনাকে সম্পর্কের জালে জড়িয়ে ফেলে ছেলেটি।
কিভাবে হয়?
ছেলেটি প্রথমে বলে আপনি তার ভালো বন্ধু, সে এতোদিনে মনের কথা বলার মত কাউকে পেয়েছে, সে আপনার কথাই ভাবছে, আপনাকে মিস করছে… এবং আরো নানান ধরণের মেকি কথা। এরপর হঠাৎ করেই তার আচরণে নাটকীয় পরিবর্তন আসে।
আপনি বোঝার আগেই আপনাকে সে তার জালে জড়িয়ে ফেলতে চাইবে। আপনাকে একটু বেশিই গুরুত্ব দিবে সে। আপনাকে বোঝাতে চাইবে আপনি তার জন্য বিশেষ কেউ। সে বলবে, আপনি তাকে যতটা বোঝেন তার স্ত্রী তাকে এতোটা বোঝে না। আপনার মত একজনের সঙ্গী সে পছন্দ করে সবসময়। ধীরে ধীরে সে আপনার চোখ, চুল ও রূপের প্রশংসা করবে এবং দুই বন্ধুর আড্ডা থেকে পুরো ব্যাপারটা ডেটিং এ রূপ নিবে।
সে তার স্ত্রীর ও সন্তানের কাছে একই রকম থাকবে। কিন্তু সে অন্য সবাইকে বলে বেড়াবে তার একজন যৌনসঙ্গীর চাইতে বাচ্চাদের জন্য আদর্শ মা একজন সংসারী স্ত্রী প্রয়োজন। কারণ যৌন চাহিদা তো সারাজীবন থাকেনা। এভাবে এক পর্যায়ে সে নতুন এই অন্যায় সম্পর্ককে মনে মনে প্রশ্রয় দিয়ে ফেলে।
এধরনের একটি সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত কেউই সুখী হয় না। এক্ষেত্রে মেয়েটি, ছেলেটির মানসিক ও শারীরিক চাহিদা মেটানোর বস্তুতে পরিণত হয়। মেয়েটিকে ব্যবহার করা হয় সংসারের ঝামেলা থেকে পালানোর হাতিয়ার হিসেবে।
কি করে এ ধরণের পুরুষদের চিনবেন?
উত্তরটা হলো, দেখা হওয়ার সাথে সাথেই যারা বন্ধু হওয়ার জন্য বেশি অস্থির হয়ে যায়, তারাই এধরণের পুরুষ। কারণ এ ধরণের পুরুষরা সবার সাথে বন্ধু করে না বরং তাঁরা যে নারীর প্রতি বেশি আকর্ষণ বোধ করে কেবল তাদেরকেই বন্ধুত্বের ফাঁদে ফেলে। তাঁরা সাধাণরত বন্ধুত্বের নাম দিয়ে মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করে এবং এক পর্যায়ে গিয়ে ফ্লার্ট করা শুরু করে।
সারাদিন বেশ অনেক বার আপনার মুঠোফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠায় এবং জানাতে চায় যে সে আপনার কথা মনে করছে এবং আপনাকে মিস করছে। এভাবে বন্ধুত্বের নাম দিয়ে আপনার অজান্তেই আপনার মনে প্রেমের সম্পর্কের বীজ বুনে ফেলে এ ধরণের ব্যক্তি।
এ ধরণের ব্যক্তি তার স্ত্রীকেও আপনাদের বন্ধুত্বের ব্যাপারে জানায়। এসব বিষয়ে সে স্ত্রীর কাছে স্বচ্ছ থাকতে চায় কারণ নিজের মনকে সে বিশ্বাস করাতে পারে না যে সে প্রতারণা করছে। নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে তাঁরা দোটানায় ভোগে এবং তাঁরা জীবনের কাছে কি চাইছে সেটা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত থাকে সবসময়।
সাবধান! এধরণের ফাঁদে কখনোই পা দেবেন না।
কারণ এ ধরণের বিবাহিত পুরুষরা কখনোই আপনার জন্য নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করবে না। বরং পুরুষটির দ্বারা আপনি মানসিক ও শারীরিক ভাবে ব্যবহৃত হবেন। তাই এ ধরণের সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়ে থাকলে নিজের মনকে প্রশ্ন করুন যে এই সম্পর্কের ভবিষ্যত কি এবং কেন এমন একজনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছেন যে কোনোদিনও আপনার হবে না। প্রথমে অল্প কিছুদিন একাকীত্বে ভুগলেও এধরণের সম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলাই ভালো।
তাই, কোনো বিবাহিত পুরুষকে যদি আপনার প্রতি একটু বেশিই বন্ধুভাবাপন্ন মনে হয় তাহলে তার থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকাই আপনার ভবিষ্যতের জন্য ভালো।