আজ গৌরবোজ্জ্বল মহান বিজয় দিবস

0

victoryঢাকা: বাংলার শান্তি প্রিয় মানুষগুলো ভয় করেনি শাসকের রক্ত চক্ষু। বিজয়ের আহ্বানে তারা বিসর্জন দিয়েছিলেন লাখো তাজা প্রাণ। অবশেষে বিজয়ের সূর্য এসে আলোকিত করে তুলেছিলো সমগ্র বাংলা। বিশ্ব দেখেছিলো বাঙ্গালির সেই শ্রেষ্ঠত্ব আর আত্মত্যাগ। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালে এই দিনে ২ লাখ মা বোনের সম্ভ্রম ও ৩০ লাখ শহীদের তাজাপ্রাণের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম আমাদের কাঙ্ক্ষিত বিজয়, মাতৃভূমি আর স্বাধীন বাংলাদেশ। আজ সেই গৌরবোজ্জ্বল মহান বিজয় দিবস।

পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ, নিপীড়ন আর দুঃশাসনের কুহেলিকা ভেদ করে ১৯৭১ সালের এই দিনটিতে অবসান ঘটেছিল পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতনের কৃষ্ণতম অধ্যায়। নারী-পুরুষ-শিশু সবার চোখে ঠাঁই পেয়েছিল সীমাহীন আনন্দের অশ্রু।

ইতিহাস থেকে, ১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল সেটির উদয় ঘটেছিলো ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিনটি ছিলো বৃহস্পতিবার। পৌষের সেই পড়ন্ত বিকেলে তৎকালীন ঢাকার রেসকোর্স ময়দান বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিকেল সাড়ে ৪টায় পাকিস্তানের সামরিক আইন প্রশাসক জোন-বি এবং ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডার লে. জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজীর নেতৃত্বে ৯১ হাজার ৫৪৯ পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণ করে। মেজর জেনারেল জ্যাকবের তৈরি করা আত্মসমর্পণের দলিলে বিকালে স্বাক্ষর করেন জেনারেল নিয়াজী ও লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা। মুজিবনগর সরকারের পক্ষে এ সময় উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন একে খন্দকার। আর এ আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটে। জন্ম নেয় একটি নতুন দেশ- বাংলাদেশ।

জাতীয় কর্মসূচি:

যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালনের লক্ষ্যে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ দিন ঢাকায় প্রত্যুষে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়েছে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিক, মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সেনাবাহিনীর আমন্ত্রিত সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মিলিত হবেন। এছাড়াও থাকবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমভিত্তিক যান্ত্রিক বহর প্রদর্শনী।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আলাদা বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা দেশের জন্য আত্মত্যাগকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তারা দেশবাসী, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, প্রবাসী বাংলাদেশীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি বাণীতে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেছেন।

একাত্তরের সেই দিনগুলোতে যারা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এই বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল তাদের প্রতি দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল দিবার্তা ডট কম পরিবারের পক্ষ থেকে রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More