গুলশানের আর্টিসান রেস্টুরেন্টে আটকে রাখা দেশি-বিদেশি জিম্মিদের উদ্ধারে কমান্ডো অভিযানের আগে জঙ্গিদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুক্রবার (১ জুলাই) মধ্যরাতে নিরাপদ দুরত্ব থেকে লাউড স্পিকারে এ প্রস্তাব তাদের জানানো হয়। আলোচনা শুরু করতে তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয় আইনশৃঙ্গলা বাহিনীর পক্ষ থেকে। কিন্তু তাতে জঙ্গিরা সাড়া দেয়নি।[ads1]
উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনির সদস্যরা জানান, আলোচনা শুরু করতে ৩ শর্ত দেয় জঙ্গিরা। রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে চিৎকার করে এসব শর্তের কথা বলছিল। তিন শর্ত হলো রাজধানী ডেমরা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামা’তুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) নেতা খালেদ সাইফুল্লাহর মুক্তি, রেস্টুরেন্ট থেকে তাদের নিরাপদে সরে যেতে দেয়া এবং ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে এ অভিযানের স্বীকৃতি।
জঙ্গিদের সঙ্গে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি জিম্মি উদ্ধারে রেস্টুরেন্টে অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার (২ জুলাই) ভোর পর্যন্ত আত্মমর্পনের জন্য অপেক্ষা করেও সাড়া না পাওয়ায় কমান্ডো অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শেষ পর্যন্ত সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে কমান্ডো অভিযান শুরু হয়। অভিযানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি নৌবাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং পুলিশের বিশেষ ইউনিট সোয়াত সদস্যরা অংশ নেয়।[ads2]
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১ জুন) রাত ৯টার দিকে আকস্মিকভাবে ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনিতে তলোয়ার উঁচিয়ে গুলশানের স্প্যানিস এ রেস্টুরেন্টে ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা। ভেতরে ঢুকেই ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভয়ার্ত পরিবেশের সৃষ্টি করে। এসময় রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেতে আসা অন্তত ৪০ জনের মতো দেশি-বিদেশি অতিথি উপস্থিত ছিলেন। বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে কোন দেশের কতজন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কমান্ডো অভিযান শেষে নিরাপত্তা বাহিনী থেকে বলা হয়েছে, এতে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ভেতর থেকে এক বিদেশিসহ উদ্ধার করা হয়েছে ৫ জনের মরদেহ। সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।[ads1]
পুরো অভিযান নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। এ নিয়ে আইএসপিআর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফিং করা হবে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সংস্থাটি।