[ads1]কেবল একটি ‘ইউলুপই’ বদলে দিয়েছে রামপুরা, বনশ্রী ও বাড্ডার কয়েক লাখ মানুষের নিত্য দিনের ভোগান্তিকে। রামপুরা ব্রিজ-সংলগ্ন বাংলাদেশ টেলিভিশনের সামনে নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম ইউলুপ। গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ইউলুপের উদ্বোধন করেন। এরপরই এটি সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সব ধরনের যান্ত্রিক যানবাহন এটি ব্যবহার করে হাতিরঝিলে ঢুকছে অথবা রামপুরা, বনশ্রী থেকে বাড্ডা বা বিশ্বরোডের দিকে যাচ্ছে।
রামপুরা ব্রিজের দুই পাশের সড়কে যানজটে পড়েননি এমন মানুষ কমই পাওয়া যাবে। আর যারা নিয়মিত এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতেন, তাদের ভোগান্তি কতটা ছিল, তা কেবল তারাই বলতে পারবেন। হাতিরঝিলের সড়ক খুলে দেওয়ার পর এটি ব্যবহার করে বাড্ডা ও রামপুরা যেতে এবং রামপুরা বা বাড্ডার মানুষের হাতিরঝিলের সড়ক দিয়ে ঢোকার দুটি মুখে দীর্ঘ যানজট ছিল নিত্যদিনের চিত্র। প্রগতি সরণির এই যানজট কাটিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে কখনো কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে থাকতে হতো নগরবাসীকে।
শুধু তা-ই নয়; উত্তরা, গুলশান, বারিধারায় বসবাসরত ব্যক্তিরা বা যারা প্রগতি সরণি ব্যবহার করে ঢাকার দক্ষিণ অংশে কিংবা হাতিরঝিল ব্যবহার করে ঢাকার পশ্চিম অংশে যাতায়াত করবেন, তাদের সময় ও কষ্ট দুটোই বেঁচে গেছে। রামপুরা ব্রিজ-সংলগ্ন সড়কের দুটি স্থান এখন আর নানামুখী যানবাহনের জন্য আটকে থাকছে না। গাড়িগুলোকে ইউটার্ন নিতে হচ্ছে না। বনশ্রী থেকে বাড্ডা যাওয়ার গাড়িগুলোর জন্য প্রগতি সরণির দুই পাশের গাড়ি আটকে রাখতে হচ্ছে না। হাতিরঝিল দিয়ে রামপুরার দিকে যেতে গাড়িগুলোকে এখন আর আগের মতো অনেক সময় ধরে হাতিরঝিল সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে না।
সোমবার সকালে ও বিকেলে অফিস শুরু ও ছুটির সময়ে ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতো সেখানে যানজট নেই। আগে হাতিরঝিলে ঢুকতে রামপুরা আবুল হোটেলের সামনে দিয়ে গাড়িগুলোকে ঘুরতে হতো। ফলে আবুল হোটেল পর্যন্ত যেতে এবং ঘুরে আবার হাতিরঝিলে ঢোকার মুখ পর্যন্ত আসতে যানজটে পড়তে হতো গাড়িগুলোকে। এতে সময় নষ্ট হতো অনেক। তা ছাড়া এ কারণে সড়কের দুই পাশে গাড়ির চাপও বেশি থাকত। এখন আর সেই সমস্যা নেই। ইউলুপ দিয়ে সরাসরি হাতিরঝিলে ঢুকছে গাড়ি। একই ইউলুপের নামার আরেকটি অংশ ব্যবহার করে গাড়িগুলো বাড্ডার দিকে যাচ্ছে। এতে বনশ্রী থেকে ব্রিজ-সংলগ্ন সড়কটি ‘একমুখী’ চলাচলের সড়ক হয়ে গেছে। এই সড়ক দিয়ে কেবল গাড়িগুলো বনশ্রীতে ঢুকছে। ইউলুপ দিয়ে গাড়িগুলো নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার কারণে রামপুরা অংশে গাড়ির চাপ অনেক কমে গেছে।[ads1]
বনশ্রী কল্যাণ সমিতির নিয়োগ করা কমিউনিটি পুলিশের এক সদস্য খাদেমুল ইসলামকে দেখা গেল বিক্ষিপ্তভাবে ব্রিজ-সংলগ্ন আগের সিগন্যালে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তার কাছে ইউলুপ হওয়ার সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে জানতে চাইলে খাদেমুল বললেন, ‘আগে এখানে ডিউটি পড়লে আট ঘণ্টার মধ্যে এক ঘণ্টাও বসার সময় পেতাম না। এত যানজট লেগে থাকত। এখন আর তেমন কোনো সমস্যা নেই। এখন যানজট নেই বললেই চলে। তাই কাজও অনেক কমে গেছে।’
ওই এলাকা দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন এমন কয়েকজন জানালেন, ভোগান্তি এখন অনেক কমে গেছে। আগের তুলনায় গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় অনেক কম লাগছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সময় এক ঘন্টাও কম লাগছে।
সেখানে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পাশের একটি গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা সফিউদ্দিন। তিনি জানালেন, রামপুরা ব্রিজের যানজট কমে গেছে। প্রগতি সরণি দিয়ে যাতায়াত এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। তিনি বললেন, কেবল দুই দিন হলো ইউলুপটি হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে যানজটের সার্বিক চিত্র আরও বদলে যাবে।[ads2]
সূত্র: প্রথম আলো