[ads1]রকার এবার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে নজর দিয়েছে। নর্থ সাউথের পর ইতিমধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) হিযবুত তাহরীরের নেতাকর্মীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বুয়েটের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে ডেকে নিয়ে এ বিষয়ে কথাও বলেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জঙ্গিবাদ দমনে শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের আলোকে বুয়েট উপাচার্যকে সুনির্দিষ্ট কিছু পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার ১২ জুলাই দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু শিক্ষকের কারণে বুয়েটে জঙ্গিবাদী মনোভাবের ছাত্রের সংখ্যা বাড়ছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত হিযবুত তাহরীর সাংগঠনিকভাবে বেশ সক্রিয়। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একমাত্র নর্থ সাউথেই হিযবুত তাহরীরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে। এরপরই সাংগঠনিক কার্যক্রমের দিক দিয়ে এগিয়ে বুয়েট।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির মাত্র ২২ ভাগ শিক্ষক বর্তমান সরকার ও প্রগতিশীল মতাদর্শের অনুসারী। ৭০ ভাগ শিক্ষকই বিএনপি-জামায়াত ও হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত। বাকি ৮ ভাগ শিক্ষক মোটামুটি নিরপেক্ষ।
বুয়েটের উপাচার্য ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসে জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত কার্যক্রমের কোনো তথ্য তার কাছে নেই। অতীত কার্যক্রমের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন করা হলে সে বিষয়ে তার কোনো মন্তব্য নেই। গোয়েন্দা প্রতিবেদন সম্পর্কে কোনো চিঠিপত্র তাদের কাছে আসেনি বলে জানান নবনিযুক্ত এই উপাচার্য। তিনি আরও জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।[ads1]
বুয়েট উপাচার্য বলেন, তারা দেশের সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে সচেতন রয়েছেন। বর্তমান বুয়েট প্রশাসন ক্যাম্পাসে জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত কার্যক্রম রোধে বদ্ধপরিকর। প্রশাসন নিয়মিত হল ও একাডেমিক কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে নানা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্র জানায়, এতদিন তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক ও একাডেমিক দিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এখন থেকে তারা ক্যাম্পাসগুলোর শান্তি-শৃঙ্খলা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও জঙ্গিবাদবিরোধী চেতনা তৈরিতে নানা উদ্যোগ নেবে।
২৩ প্রতিষ্ঠানে নজরদারি: শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম গ্রহণের পাশাপাশি ২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে তারা বিশেষ খোঁজ-খবর করছেন। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি কয়েকটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলও রয়েছে।
জানা যায়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখন পর্যন্ত দেশের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩ জনকে শনাক্ত করেছে; যারা জঙ্গি সম্পৃক্ততায় জড়িত আছেন। এর মধ্যে নর্থ সাউথের ১১, বুয়েটের ৬, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ বিভাগের শিক্ষকসহ তিনজন রয়েছেন। অবশ্য বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে চিহ্নিতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিতে দেখা গেছে।
এ ছাড়া বাংলাদেশে জিহাদি গ্রুপ তৈরির চেষ্টায় ২০১৫ সালে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ও ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করা একজনকে আটক করা হয়। জঙ্গি ইস্যুতে ২০১০ সাল থেকে নর্থ সাউথের পাশাপাশি যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম বারবার এসেছে সেগুলো হলো- দারুল ইহসান, ব্র্যাক, বুয়েট এবং ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।[ads2]
সূত্র: সমকাল