কারো কারো কাছে এটি একটি অনবদ্য কবিতা। আবার কারো মতে, বাউল সাধকদের এ দেশে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি ছিলো এদেশের লোকজ সংস্কৃতি, মাটির মানুষের কাছে এক বিশ্বনেতার বিপ্লবী ইশতেহার। ইতিহাস ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মুক্তি পিয়াসী জাতির কণ্ঠধ্বনিই উচ্চারিত হয়েছিলো সেদিনের রেসকোর্স ময়দানে। তারা বলছেন, উচ্চারণে যে স্বপ্নের বীজ বুনেছেন বঙ্গবন্ধু, আজকের বাংলাদেশের সোপান সেখানেই।
বুকে তার বাঙালি আর চোখ জুড়ে স্বপ্ন কথন। বঞ্চিত, শোষিত মানুষের মুক্তিদ্রষ্টা কবি- যার আকাশমুখী আঙ্গুল আর বজ্রকন্ঠের ঘোষণা বিশ্ব মানচিত্রে একটি দেশ, ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রিয় মৃত্তিকা আর একটি লাল সবুজের পতাকা দিয়েছে স্বাধীনতাকামী বাঙ্গালীদের।
১৮ মিনিটের সে ভাষণটি এরপরই নিজেই রচনা করেছে ইতিহাস। কারো কাছে অনবদ্য মহাকাব্য, আবার কারো কাছে দিন বদলের চীর মুক্তির বাণী।
এটা খুব কম নেতাই তার জীবনে করতে পেরেছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।
আর সমাজতাত্ত্বিক ও গবেষক খন্দকার সাখাওয়াত আলী বলেন, বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেটা হলো অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক মুক্তি, এ মুক্তি সাংস্কৃতিক মুক্তি। তার বক্তব্য আমাদের দেশকে স্বাধীনতার জায়গায় নিয়ে গেছে। কিন্তু সেই জায়গা রক্ষা করার সংগ্রামটা কিন্তু আমাদের আজ সবার।’
কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘গোটা পৃথিবীর যারা গণতন্ত্র নিয়ে ভাবেন, যারা মানবতাবাদকে নিয়ে ভাবেন। যারা মনুষ্যত্ব স্থাপনার কথা ভাবেন, মানুষের অধিকারের কথা নিয়ে ভাবেন তারা উত্তাল হয়ে আছেন তিনি কি বলবেন? এবং তিনি বললেন।’
গণতন্ত্র আর অগ্রগতির পথে কখনো কখনো বাংলাদেশ হোঁচট খেলেও, ৭ই মার্চের ভাষণ ঠিকই আলোর মশাল হয়ে পথ দেখায় এদেশের মানুষকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘এই স্বাধীন বাংলাদেশের রিজার্ভ পাকিস্তানের রিজার্ভের চেয়ে দ্বিগুণ। যারা আমাদেরকে দাবিয়ে রাখতে চেয়েছিল তারাই আজকে দাবিতো হয়ে পড়ে আছে। আর আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সেই এগিয়ে যাওয়ার পথে আমাদের পথের কাঁটা হয়ে যাচ্ছে এই অপরাজনীতি।’
বিশ্বের অন্যতম সেরা এ ভাষণটি সব অপশক্তির বিরুদ্ধে আজো যেন জাগিয়ে রাখে গণতন্ত্র আর মুক্তির পথে চলা ষোল কোটি বাঙ্গালিকে।