স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, দেশের কেউই আইন ও বিচারের ঊর্ধ্বে নয়। অপরাধী যেই হোক না কেন তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকার জিরো টলারেন্সে বিশ্বাস করেন, এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। একই সঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় আমরা চলি বলেই আজ সারা বাংলাদেশের একটি সুন্দর পরিবশ ও শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার সকালে পিরোজপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশের মানুষ শান্তি প্রিয় মানুষ, ধর্ম ভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। আমরা এখানে যার যার ধর্ম তার তার মতো করে পালন করি। তাই প্রধানমন্ত্রী বলে থাকেন ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।
তিনি আরো বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই মাদকদ্রব্য যুবকদের কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। তাই মাদকের ব্যবহারকে পরিহার করা জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি গণসচেতনতা বৃদ্ধি ও অভিভাবকদের সজাগ থাকতে হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চলি বলেই অপরাধ দমন সম্ভব হয়েছে। একটা ক্ষেত্রে আমাদের দুর্বলতা রয়েছে তাহলো মাদক। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে মাদক প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন। আমি জানতে পেরেছি পিরোজপুরে স্থানীয় তরুণ যুবকরা মাদক বিরোধী প্রচারণা কর্মসূচি চালাচ্ছে। আমরা গত জানুয়ারিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উদ্যোগে মাসব্যাপী মাদক বিরোধী প্রচারণা চালিয়েছি। মাদকের মামলায় সাক্ষী পাওয়া যায় না বলে মোবাইল কোর্ট করে তাৎক্ষনিকভাবে অপরাধীকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে বলে এ অভিযানের সুফল পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অধীনে একটি স্বতন্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার কাজ চলছে, জনবল বৃদ্ধি, প্রশিক্ষন ও অস্ত্রে সজ্জিত করে। র্যাব, কোস্টগার্ড, পুলিশকেও শক্তিশালীও করা হচ্ছে মাদকপাচার, মানবপাচার ও বঙ্গোপসাগরের জলদস্যুতা দমনে। পুলিশে নতুন ৫০ হাজার সদস্য নিয়োগ, ব্যারাক তৈরী, আধুনিকায়ন, ট্যুরিষ্ট পুলিশ, শিল্প পুলিশ, নৌ পুলিশ প্রতিষ্ঠা করে যেকোন অপরাধ দমনে তাদের আরো সক্রিয় করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিছু দিন আগে কয়েক বিদেশিকে হত্যা, শিয়া মসজিদে হত্যা ও হামলা করে আমেরিকার পত্রিকায় এ দেশে আইএসের তৎপরতা রয়েছে বলে যে প্রচারণা চালানো হয়েছিল তা আমাদের তৎপরতায় মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। ব্যর্থ হয়েছে কন্ট্রাক্ট কিলিং আর নস্যাৎ হয়েছে দানাবাধা দেশি-বিদেশি নানা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের। ফলে আমাদের দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখা সম্ভব হচ্ছে। অচিরেই সকল ধর্মের মানুষের সমন্বয়ে জাতীয় ভাবে একটি সম্মেলন আমরা করব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন নিরাপত্তার অভাব হলে উন্নয়ন বিঘ্নিত হয় তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। অথচ বিএনপি আমলে দেশে হত্যা-অরাজকতার রাজনীতি শুরু হয়েছিল। হবিগঞ্জে আমাদের সাবেক অর্থমন্ত্রী এস এম কিবরিয়ার মত আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদ, টঙ্গীতে শ্রমিক নেতা আহসানউল্লাহ এমপির জনপ্রিয় রাজনীতিবিদকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে চেয়েছিল।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মো. খাইরুল আলম শেখের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য একেএমএ আউয়াল, হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু জহির, বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি হুমায়ূন কবির, পিরোজপুর পুলিশ সুপার মো. ওয়ালিদ হোসেন।
এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমএ হাকিম হাওলাদার, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী মিসেস লায়লা পারভীন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি গোবিন্দ কুমার রায় চৌধুরী, মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান, ভান্ডারিয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান, জেলা কৃষকলীগ সভাপতি চাঁন মিয়া মাঝি, জেলা যুবলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলুসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ।
Next Post