ঢাকা: ১৮ দলের মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচির আগে ঢাকার সঙ্গে দূরপাল্লার যান চলাচলের পর এবার রাজধানীতে ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ হয়ে গেছে নগর পরিবহণ। ভোর থেকে নগরীর কোনো রুটে চলছে না বাস। কোনো ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছে যাত্রীরা।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, গন্তব্যে যেতে মোড়ে মোড়ে শত শত যাত্রী ভিড় করেছে সকাল থেকে। অল্প কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশা চললেও চলছে না নিউম্যান হলারগুলোও। গন্তব্যে পৌঁছতে যাত্রীদের একমাত্র ভরসা রিকশা। আর বাহনের তুলনায় যাত্রী বেশি, এই অবস্থায় অস্বাভাবিক ভাড়া চাইলে রিকশাচালকরাও।
দুর্ভোগে পড়া যাত্রীরা এই অবস্থায় পড়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জরুরি কাজে বের হওয়া যাত্রীরা কোনো পরিবহণ না পেয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। গুলিস্তান থেকে মিরপুরগামী যাত্রী আরিফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা এটা কোন দেশে বাস করছি। আগে বিরোধী দলের অবরোধ হয়েছে আর এখন চলছে সরকারি দলের অবরোধ।”
এদিকে, কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে পরিবহণ মালিকরা কিছু বলছেন না। তবে পরিবহন খাতের সরকার-সমর্থক একাধিক নেতা জানান, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ কার্যালয়েও পরিবহণ নেতাদের ডেকে নিয়ে একই ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, সরকারের অঘোষিত অবরোধ বাস্তবায়নের কাজে সমন্বয় করছেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান, রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী প্রমুখ।
সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার বিকেলে মিরপুরে এমপি আসলামুল হকের ভাই মফিজুল হকের বাসায় পরিবহণ শ্রমিক-মালিকদের ডেকে বৈঠকে বসেন নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান। সেখানে আসলামুল হকও ছিলেন। সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনের উপস্থিতিতে এ বৈঠক থেকে বাস না চালানোর নির্দেশ দেয়া হয় বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়।
এদিকে, দূরপাল্লার বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর শনিবার সকাল থেকে রেল চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে। সদরঘাট বাস টার্মিনালে ভিড়তে দেয়া হচ্ছে না কোনো লঞ্চ।