ঢাকা: জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ও হারানো কার্ড নবায়ন করতে নাগরিকদের আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে নির্ধারিত ফি গুণতে হবে। এতোদিন এই সেবাটি নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিনামূল্যে দিয়ে আসছিল। বিনামূল্যে এনআইডি সেবা প্রদানের আজকেই শেষ দিন।
গত ২৫ জুন এ সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশ করে ইসি। গেজেটে উল্লেখ করা হয়, এ সেবা পেতে হলে নাগরিকদের ১০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ও হারানো কার্ড উত্তোলন করতে হবে।
ইসির প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী- জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়নের ক্ষেত্রে নাগরিকদের (সাধারণ) ১০০ এবং জরুরি ক্ষেত্রে ১৫০ টাকা ফি দিতে হবে।
এছাড়া হারানো বা নষ্ট হওয়ার কারণে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে গেলে প্রথম বার (সাধারণ) ২০০ টাকা, জরুরি ৩০০ টাকা। দ্বিতীয়বার সাধারণ ৩০০ টাকা, জরুরি ৫০০ টাকা এবং পরবর্তী যেকোনো সময়ের জন্য সাধারণ ৫০০ টাকা এবং জরুরি ক্ষেত্রে এক হাজার টাকা ফি দিতে হবে।
গেজেটে আরো উল্লেখ করা হয়, উল্লিখিত ফি নির্দিষ্ট খাতে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে অথবা সচিব, নির্বাচন কমিশনের অনুকূলে পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে অথবা কমিশনের নির্দিষ্টকৃত নম্বরে মোবাইল ব্যাংকিং বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মধ্যেমে পরিশোধ করতে পারবেন। এবং ফি প্রাপ্তির তারিখ হতে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তা সরকারি হিসাবে জমা করতে হবে।
এদিকে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ফি কার্যকর হলেও ইসি এখনো স্মার্টকার্ড বিতরণের সময়সূচি ঘোষণা করেনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্মার্টকার্ড দেয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে নাগরিকদের পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের কার্যক্রম চলছে। দেশের ৯ কোটি ৬২ লাখেরও বেশি ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ৪৭ লাখ নাগরিকের হাতে এখনো কোনো পরিচয়পত্র দেয়া হয়নি। বাকিদের হাতে রয়েছে লেমিনেটেড পরিচয়পত্র। এতোদিন বিনামূল্যে পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছে এবং হারানো বা পুনরায় এ কার্ড নিতে বা সংশোধনেও বিনামূল্যে সেবা দিয়েছে ইসি।
এছাড়া খুব শিগগির নাগরিকদের বিনামূল্যে স্মার্টকার্ড দেয়ার কথাও রয়েছে। তবে কোন তারিখে স্মার্টকার্ড দেয়া হবে তার ঘোষণা না হলেও ১ সেপ্টেম্বর থেকে যে কোনো সংশোধিত ও ডুপ্লিকেট লেমিনেটেড পরিচয়পত্র নিতে নাগরিকদের ফি দিতে হবে।
ইসি সূত্রে জানা যায়, ৩১ অগাস্টের মধ্যে ইসিতে যাদের আবেদন জমা পড়বে, তাদের সেবা পেতে টাকা দিতে হবে না। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য এ ফি নির্ধারিত রয়েছে। জরুরি কাজে যে কোনো কার্ড প্রয়োজন হলে নির্ধারিত ফি দিয়েই তা নিতে হবে।
তবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ফি নিয়ে সাধারণ ও জরুরি সেবা দিতে ইসির প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেই। কোথায় টাকা দেয়া হবে, কোন বিভাগ-জেলার ভোটার কোন ডেস্কে কাজ করবে, ওয়ান স্টপ সার্ভিস থাকবে কি না, কল সেন্টারের সুযোগ রাখা হবে কি না এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনা কেমন হবে তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।
নবায়নের ফি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বাংলামেইলকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের গেজেটে এ বিষয়ে বলা আছে। এছাড়া আমরা যে বিষয়টি যোগ করেছি তাহলো কেউ ইচ্ছা করলে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ফি’র টাকা জমা দিতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করেছি। নাগরিকরা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ট্রেজারি চালান করতে পারবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সকল ব্যাংকের সাথেও চুক্তি করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’