২,৫৪,৬৮১ কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেয়ে বিশ্ব রেকর্ডে বাংলাদেশ

0
image_73988_0ঢাকা: জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে বিশ্ব রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ। সকাল থেকেই ঢল নামে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের জাতীয় প্যারেড ময়দানে।
আজ বুধবার সকাল থেকেই জনস্রোত আসতে থাকে প্যারেড গ্রাউন্ডের দিকে। বেলা সোয়া ১১টার মধ্যেই দুই লাখ ৫৪ হাজার মানুষ স্থান করে নেয় প্যারেড গ্রাউন্ডে।বিশ্বের ইতিহাসে এই প্রথম এতো বেশি মানুষের অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হলো। যা ইতিপূর্বে গাওয়া পৃথিবীর সব জাতীয় সংগীতের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এর আগে এ রেকর্ডটি ছিল ভারতের। ১ লাখ ২১ হাজার ৬৫৩ মানুষ এতে অংশ নিয়েছিলেন। মূল অনুষ্ঠানের আগে দুইবার প্রস্তুতিমূলকভাবে জাতীয় সংগীত গান উপস্থিত লাখো জনতা। সাবইকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে। ফলে সকাল ১১টা ২০ মিনিটে গোটা জাতিই একসঙ্গে গেয়ে ওঠে “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি”।

‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ কর্মসূচি বাস্তায়ন করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ। মানব পতাকার পর এটি হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য জাতীয় সংগীতের আরেকটি বিশ্ব রেকর্ড।

 অনুষ্ঠান পরিচালনা করছেন নাট্য ব্যক্তিত্ব আফজাল হোসেন, ফারজানা ব্রাউনিয়া এবং চঞ্চল চৌধুরী।
জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ মিলিয়ে ইতিহাসের অংশ হতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে দেশেপ্রেমিক লাখো জনতা। বেলা ১১টার পর পরই সবার কণ্ঠে বেজে উঠবে প্রাণপ্রিয় জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’।সকাল থেকেই  বাংলাদেশের শিল্পীরা দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশন করে গোটা প্যারেড গ্রাউণ্ডকে উদ্বীপ্ত করে রেখেছেন।
 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টায় প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছেনে। এ সময় প্যারেড গ্রাউণ্ডে সমবেত লোকের সংখ্যা দুই লাখ ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে উঠে হাত নেড়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে যে যেখানে আছেন সেখানে দাাঁড়িয়ে নির্দিষ্ট সময়ে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে ব্যতিক্রমধর্মী এ কর্মসূচিতে শরীক ;হওয়ার আহবান জানান।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও প্রধানমন্ত্রীর এই আহবানে সাড়া দিয়ে ঐ সময়ে দাঁড়িয়ে সঙ্গীত পরিবেশন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ইতোমধ্যেই।বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে সমবেত লোকের সংখ্যা দুই লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তখনও দলে দলে লোক প্যারেড গ্রাউণ্ডমুখী।
সেই মহেন্দ্রক্ষণটি আসার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাগত ভাষণ দেন। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বলেন, যে জাতীয় সঙ্গীত আমাদের উজ্জীবিত করে  সেই সঙ্গীত পরিবেশন করে আজ আমরা বিশ্ব রেকর্ড করতে যাচ্ছি।তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন, আমরা এই দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবো। প্রধানমন্ত্রী প্যারেড গ্রাউন্ডের বাইরে সবাইকে এই আয়োজনে যার যার অবস্থান থেকে শরীক হওয়ার হহবান জানান।

 বুধবার সকাল সাড়ে ৬টায় প্যারেড মাঠের ফটক খুলে দেয়ার আগেই নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে পায়ে হেঁটে বাইরে জড়ো হতে থাকে নানা বয়সী নারী, পুরুষ, কিশোর।

 বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, পোশাক ও পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতের কর্মীসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ প্যারেড মাঠে উপস্থিত হতে থাকেন জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ মেলাতে।

 ২০১৩ সালের ৬ মে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেয়ে গিনেজ বুকে স্থান করে নিয়েছিল ভারতের সাহারা পরিবারের উদ্যোগে আয়োজিত ঐ অনুষ্ঠানে ১ লাখ ২১ হাজার ৬৫৩ জন অংশ নিয়েছিলেন।

জাতীয় প্যারেড ময়দানের জমায়েত সকাল ৮টা ২৩ মিনিটেই ওই সংখ্যা ছাড়িয়ে যায়। সাড়ে ৮টার দিকে মাঠে লোকসংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ২৩ হাজারের বেশি। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই সংখ্যা আরও বাড়তে থাকে।
জাতীয় সঙ্গীত গাইতে আসা মানুষদের গুনে গুনে মাঠে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে মাঠের ওই অংশটি ভাগ করা হয়েছে ১৫টি সেক্টরে।

 সেখানে প্রত্যেককে একটি করে ক্যাপ ও ব্যাগ দেয়া হচ্ছে। এই ব্যাগে জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত ও নিয়মাবলী লেখা সংবলিত একটি কার্ড, পানি, জুস, স্যালাইনসহ তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ওষুধ রয়েছে।

প্রতিটি সেক্টরেই একটি করে বড় স্ক্রিনে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে মাঠের পরিস্থিতি ও লোকের সংখ্যা। অনেকেই মাঠে এসেছেন গায়ে পতাকা জড়িয়ে, মাথায় পতাকার রঙের ব্যান্ডানা পরে।

 বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কণ্ঠ মেলাবেন জাতীয় সংগীতে। এ সময় থাকবেন সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যসহ সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও।

 মূল পর্বের আগে সকাল ৮টা থেকে শিল্পকলা একাডেমীর পরিবেশনায় দেশবরেণ্য এবং খ্যাতনামা শিল্পীদের অংশগ্রহণে মাঠে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্বে রয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More