ঢাকা: রাজধানীর উত্তরাসহ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে পৌনে ২ কোটি টাকাসহ অপহরণকারী চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করেছে র্যাব।
রোববার বিকেলে র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের পরিচালক (লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং) মুফতি মাহমুদ খান।
আটককৃতরা হলেন- মিজানুর রহমান মিজান (৩৪), রেজাউল করিম (৩৬), নজরুল ইসলাম (৩২), জহির উদ্দিন (৩৭), শাহ মুহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ (৩৭)।
রোববার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে উত্তরার কসাইবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্নস্থান থেকে তাদের আটক করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে মুক্তিপনের ১ কোটি ৮০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
মুফতি মাহমুদ খান জানান, গত ২ মে টিএনজেড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাদাৎ হোসেন শামীমের একমাত্র ছেলে আবিরকে (৮) বনানী ফ্লাইওভার থেকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে শামীমের গাড়ি চালক রেজাউল করিম জড়িত এবং তিনি ঘটনার মূল হোতা ও পরিকল্পনাকারী।
রেজাউল করিম তার সঙ্গীদের নিয়ে গত এক বছর ধরে শামীমের ছেলে আবিরকে অপহরণের পরিকল্পনা করে আসছিলেন। প্রথমে তাদের পরিকল্পনা ছিল শামীমের টাকা ছিনতাই করা। অধিক লাভের আশায় পরবর্তীতে তারা সে পরিকল্পনা থেকে সরে আসে।
পরে গত ২ মে আবিরকে অপহরণের পরিকল্পনা অনুযায়ী চক্রের ১৪ জনের একটি দল দুই থেকে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে রাস্তায় অবস্থান নেয়। এদিন শামীমের গাড়ি চালক ও ঘটনার মূল হোতা রেজাউল করিম আবিরকে নিয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে উত্তরার একটি মাদরাসা থেকে বাসায় ফেরার পথে বনানী ফ্লাইওভারের সামনে অপরহরণকারী চক্রের দুটি গ্রুপ গাড়িটিকে সিগন্যাল দিয়ে দাঁড় করায়। এসময় তারা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে গাড়িসহ আবিরকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তারা আবিরকে বলে তোমাদের গাড়ি চালক অপরাধী। তাকে রেখে তোমাকে ছেড়ে দেয়া হবে। তুমি কোনো ভয় পেও না। কিন্তু অহরণকারীরা আবিরকে আটক করে তার বাবা শামীমের মোবাইলে ফোন দিয়ে ১০ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরবর্তীতে শামীম ২ কোটি টাকা দিতে রাজি হন। এর মধ্যে ২৭ লাখ টাকা নগদ এবং বাকি টাকা চেকের মাধ্যমে দেয়া হয়।
টাকা পেয়ে চক্রটি গত ৬ মে আবিরকে রাজধানীর হোটেল রেডিসনের সামনে ফেলে যায়। এরপর শামীম ঘটনাটি র্যাবকে জানালে র্যাব ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে আজ রোববার ভোরে চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করে।
মুফতি মাহমুদ খান আরো জানান, অপরহণকারীরা পেশাদার অপরাধী। অন্য সদস্যদের ধরার জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে।