বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় তিনটি বিষয়কে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। এগুলো হচ্ছে, হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরানো, বুড়িগঙ্গা নদীকে দূষণমুক্ত করা ও ঢাকা শহরের জলাশয়, খাল, দখল করে গড়ে ওঠা আবাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক বক্তৃতায় রেহমান সোবহান এ কথা বলেন। সেখানে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ক্লাইমেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নলেজ নেটওয়ার্কের নির্বাহী প্রধান সাইমন ম্যাক্সুয়েল বক্তব্য দেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে সিপিডির বার্ষিক বক্তৃতা ২০১৫ এর অংশ হিসেবে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে রেহমান সোবহান বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করা থেকে সরে এলেও শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নিজস্ব বাজেট থেকে টাকা বরাদ্দ দিয়ে কাজ শুরু করেছেন। তিনি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সমর্থ হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে রেহমান সোবহান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাকে আরও অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন। বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলো জলবায়ু তহবিলে অর্থ না দিলে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে কি না, তিনি সে প্রশ্ন তোলেন।
রেহমান সোবহান বলেন, ‘আমরা গত ৩০ বছর ধরে বুড়িগঙ্গা নদীকে দূষণমুক্ত করার কথা বলছি, কিন্তু দূষণ বন্ধ হয়নি। এখনো চলছে। হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরানো নিয়ে আরেকটি নাটক আমরা দেখছি। ট্যানারিগুলো তাদের বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষিত করছে। তাদের এখনো সরানো যাচ্ছে না। ঢাকা শহরের জলাশয়, খাল, দখল করে আবাসন হচ্ছে। এ নিয়েও আমরা কিছু করতে পারছি না। বাংলাদেশের পরিবেশের জন্য এই তিনটি বিষয় বড় চ্যালেঞ্জ।’
যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ক্লাইমেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নলেজ নেটওয়ার্কের নির্বাহী প্রধান সাইমন ম্যাক্সুয়েল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তিনটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য সঠিক নেতৃত্ব, সঠিক নীতি প্রণয়ন ও তার সঠিক বাস্তবায়ন দরকার।
সাইমন বিশ্বের স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এ তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে সাইমন জলবায়ু সম্মেলনকে সফল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এতে অন্তত বিশ্বের ১৮৫টি দেশ তার কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে। তবে তা কতটুকু সফল হবে, তা রাষ্ট্রগুলোর সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ ছাড়া দেশের জলবায়ু ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, কূটনৈতিক পরিবেশবাদী সংগঠন ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রশ্নোত্তরপর্বে অংশ নেন।