বাংলাদেশে পানি শোধনাগার প্রকল্পে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার কাজ পেয়েছে ভারতীয় ওয়াটার টেকনোলজি কোম্পানি ভিএ টেক ওয়াবাগ। আর্ন্তজাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এ কাজ পেয়েছে কোম্পানিটি। সরকার ইতোমধ্যে তাদের কাজের সম্মতি দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক থেকেও নো অবজেকশন পাওয়া গেছে। তবে ওই কোম্পানিকে এখনো ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়নি।
জানা যায়, রাজধানী ঢাকার পাগলা এলাকায় অবস্থিত পাগলা স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি)-এর পুনর্গঠন, সম্প্রসারণ এবং পরিচালনার জন্য ডিজাইন, বিল্ড অ্যান্ড অপারেট (ডিবিও)-এর জন্য ২০২০ সালে আর্ন্তজাতিক দরপত্র আহবান করে ঢাকা ওয়াসা। এতে ভারতের ওই কোম্পানি ছাড়াও তুরস্ক, চীন ও ইউরোপিয় ইউনিয়নের মোট ৭/৮ টি কোম্পানি অংশ নেয়। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ভারতের ভিএ টেক ওয়াবাগ নির্বাচিত হয়েছে। এরপর ওই কোম্পানিকে কাজের বিষয়ে সরকার থেকেও অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)-সহ বহুপক্ষীয় আর্থিক সংস্থার তহবিল দিয়ে ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড সুয়ারেজ অথরিটির (ঢাকা ওয়াসা) জন্য এই উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য দরপত্রের পর বিশ্বব্যাংক থেকেও নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে। তবে এখনো ওই কোম্পানির সাথে ঢাকা ওয়াসার চুক্তি সম্পন্ন হয়নি। ফলে প্রকল্পের কাজও এখনো শুরু হয়নি।
জানা যায়, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টটিতে প্রতিদিন ২০০ মিলিয়ন লিটার পানি পরিশোধন করার টার্গেট নির্ধারণ করেছে ঢাকা ওয়াসা। ওই কোম্পানি প্লান্ট স্থাপনের পাশাপাশি পাঁচ বছর এটির রক্ষণাবেক্ষণ করবে বলেও দরপত্রের শর্তে উল্লেখ রয়েছে।
ঢাকা ওয়াসার কাজ পাওয়া নিয়ে ভারতের বিভিন্ন পত্রিকায়ও সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। গত শনিবার টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভারতীয় কোম্পানি ওয়াবাগ সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে বলেছে, প্ল্যান্টটি সক্রিয়¯স্লাজ ট্রিটমেন্ট প্রক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে কাজ করবে। যা মূলত বর্জ্য বা নোংরা পানি প্রক্রিয়ার সময় উৎপন্ন হওয়া বায়োগ্যাস ব্যবহার করে পরিচালিত হয়। এটি পরিবেশবান্ধব এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যও কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছে।
ভিএ টেক ওয়াবাগর দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের রিজিওনাল বিজনেস হেড অরবিন্দ দুল্লু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে বলেছেন, ‘প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের কারণে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এই প্রকল্পটির কাজ পেয়েছি আমরা।’
এ বিষয়ে ওই প্রকল্পের পরিচালক ঢাকা ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘২০২০ সালে করোনার সময় আমরা এ প্রকল্পের জন্য আর্ন্তজাতিক দরপত্র আহ্বান করেছিলাম। এতে খরচ ধরা হয়েছে পাঁচ বছরের সার্ভিসসহ প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। দরপত্রে ভারতের ওই কোম্পানি ছাড়াও চীন, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের ৭/৮ টি কোম্পানি অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ভারতীয় ওই কোম্পানি কাজ পেয়েছে।’
বর্তমানে বিভিন্ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে জানিয়ে বলেন, ইতোমধ্যে সরকার থেকে অনুমোদন পাওয়া গেছে। আর বিশ্বব্যাংকও নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দিয়েছে। আরো কিছু প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে। এজন্য এখনো চুক্তি সম্পন্ন হয়নি। প্রক্রিয়াগুলো শেষ হলে তারপর তারা কাজ শুরু করবে।