মৌখিক ও চূড়ান্ত পরীক্ষা থেকে শুরু করে ক্লাস প্রেজেন্টেশনেও ছাত্রীদের কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখা বাধ্যতামূলক করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগ। সম্প্রতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আজিজুল হকের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে, বিজ্ঞপ্তিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বাংলা বিভাগের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন অনেকেই। ওই বিভাগের এক ছাত্রী বিজ্ঞপ্তিটি শেয়ার করে লিখেছেন, এখন কার দ্বারস্থ হওয়া যাবে? কার কাছে যাবো? না আছে আইন, না আছে স্বাধীনতা। এখন আবার একদল সুশীল শ্রেণি বলবে, “এত যদি সমস্যা হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসছে কেন?”
তাই এই স্ট্যাটাসে এক ছাত্রী লিখেছেন, এই যুগে এসেও তাদের মুখ দেখিয়ে শনাক্ত করাতে হবে যে সে বিভাগের ছাত্রী। আরেকজন লিখেন, এত সমস্যা থাকলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিস্টেম চালু করেনা কেন?
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিভাগটির মৌখিক পরীক্ষায় নিকাব-হিজার পড়ে কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান না দেখানোয় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে অনুপস্থিত দেখানোর ঘটনা ঘটেছিল। ফলে প্রথম সেমিস্টারের মৌখিক পরীক্ষায় উপস্থিত হলেও ওই ছাত্রীকে এ কারণে অনুপস্থিত দেখানো হয়।
এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখতে হবে বলে বিভাগের একাডেমিক কমিটি সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের তিনমাস পর গত ১১ ডিসেম্বর এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছাত্রীদের কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখা বাধ্যতামূলক বলে জানায় বাংলা বিভাগ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলা বিভাগের সকল শিক্ষার্থীকে জানানো যাচ্ছে যে, গত ১৮/৯/২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত বাংলা বিভাগের একাডেমিক কমিটি সর্বসম্মতভাবে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী বাংলা বিভাগের প্রতি ব্যাচের সংযোগ ক্লাস (টিউটোরিয়াল প্রেজেন্টেশন), মিডটার্ম পরীক্ষা, চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং মৌখিক সময় পরীক্ষার্থীকে শনাক্ত করার জন্য কানসহ মুখমণ্ডল পরীক্ষা চলাকালীন দৃশ্যমান রাখতে হবে।”
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ সিদ্ধান্ত প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষকগণ ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের অবহিত করেছেন। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কোনো কোনো শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্ত পালনে শৈথিল্য দেখাচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬/১২/২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
“১৮/৯/২০১২ তারিখে গৃহীত উপরিউক্ত সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে যারা পালন করবে না তাদের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এ বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আজিজুল হক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসরণ করেই বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। এই নিয়মটি ভর্তি পরীক্ষার সময়ও কার্যকর থাকে। এছাড়া নকলরোধ ও পরীক্ষার্থীকে শনাক্তকরণের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।