গত ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় ১৮ দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালীন রাজধানীর শাহবাগ শিশুপার্কের সামনে পেট্রোল বোমায় বিহঙ্গ পরিবহনের যে বাসটি আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল, সেই বাসে ছিলন এই ব্যক্তি। ওই দিনের আগুনের ঘটনায় তার শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে এবং শ্বাসনালীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দগ্ধ এই ব্যক্তি দিবারতা.কমের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কি দোষ আছিল আমাগো? আমরাতো কারো পক্ষেও না, বিপক্ষেও না। আমাগো উপর এতো কিসের রাগ তাগো? আমরা কি হেগো খেলনা? যেমনে ইচ্ছা হয় আমাগো জান নিয়া খেলাইবো। বাঁচায়া রাখছে কেন? মাইরা ফেলাইলেই তো ভালা হইতো? আরেক পক্ষ আইসা লাশ নিয়া মিছিল করত নিজেগো স্বার্থে। এই দেশে আর বাঁইচা থাকবার চাই না। দেশ আর প্রসাশনরে থুথু দেই।’
গত ৩০ নভেম্বর মালিবাগ চৌধুরী পাড়ায় অবরোধকারীদের ছোঁড়া ককটেলে নিয়ন্ত্রণ হারায় একটি বাস। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হাবিবুর রহমান নামে এক রিকশা আরোহীর। আর দুই বাসযাত্রীসহ আহত হন পাঁচ জন। আহতদের মধ্যে একজন রেজাউল করিম (৪০)। ওই দিনের ঘটনায় তার শরীরের ১৩ শতাংশ দগ্ধ হয়।
এখন কেমন আছেন? জানতে চাইলে দিবারতা.কমকে তিনি বলেন, ‘আমরা কর্মজীবী মানুষ। দৈনিক হারভাঙ্গা পরিশ্রম করতাম। বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ ছিল না। আগুনে পুড়ে এখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি। বিশ্রাম নেবার সুযোগ পাচ্ছি। তাহলে আপনিই বলেন, আমরা ভালো আছি না?’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টি সার্জারির বেডে সুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন এমন অনেকেই।
বিগত হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত ১১৫ জন দগ্ধ হয়েছেন বলে জানায় ঢামেকহাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্ময়কারী শামন্ত লাল।
তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে মারা গেছে নয় জন ব্যক্তি। আরো পাঁচ জনের অবস্থা ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ।