এবার ফ্যাসিবাদের কালো থাবায় দৈনিক দিনকাল। পত্রিকাটির ডিক্লারেশন (প্রকাশনার অনুমতি) বাতিল করে দিয়েছে সরকার। এতে দীর্ঘ দিনের পুরাতন এ পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়েছেন পত্রিকাটির সাথে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী।
ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর প্রথমেই বন্ধ করেছিল চ্যানেল ওয়ান। তারপর আমার দেশ, দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টেলিভিশন। আমার দেশকে প্রথম দফায় ২০১০ সালের ১ জুন বন্ধ করে দিতে ডিক্লারেশন বাতিল করেছিল অন্যায় ভাবে। হাইকোর্টে রীট আবেদন করার প্রক্রিয়ায় প্রকাশনার অনুমতি বহাল করতে মাস খানেকের বেশি সময় লেগেছিল। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল গায়ের জোরে পত্রিকাটির ছাপাখানা দখলে নিয়ে নেয় সরকারি বাহিনী। পত্রিকাটিকে প্রকাশ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি আর। এছাড়া জেলা শহর থেকে বের হওয়া স্থানীয় অনেক পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করেছে ফ্যাসিবাদী সরকার নানা অজুহাতে।
ভিন্নমতের সংবাদপত্র বন্ধ করা আওয়ামী লীগের মজ্জাগত অভ্যাস। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান সকল পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। শেখ মুজিবুর রহমান চারটি পত্রিকা রেখেছিলেন রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে। যেখানে শুধু তাঁর গুণকীর্তন করা হবে।
এদিকে দৈনিক দিনকাল পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। এসময় সাংবাদিক নেতারা অবিলম্বে দৈনিক দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেওয়ার দাবি জানান।
সোমবার (২০শে ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ফ্যাসিবাদ রুখে দাড়াও, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করো, বন্ধ সংবাদ মাধ্যম খুলে দাও’ শিরোনামে ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সাংবাদিকরা।
সমাবেশে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, নির্বাচনের অঙ্গীকারে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে বিকাশ করার কথা বলা হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা পত্রিকা বন্ধের কথা বলে। তারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না।
বিএফইউজে সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, আজকে দেশে অন্যায়ভাবে অনেক গণমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমি ঘোষণা দিতে চাই, যদি অবিলম্বে দৈনিক দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা সারাদেশে কঠোর আন্দোলনে নামব।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তারা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল করে কদম ফোয়ারা ঘুরে প্রেসক্লাবের ভেতরে এসে শেষ করেন।
বিএফইউজের (একাংশ) সভাপতি এম. আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং শাহজাহান সাজুর সঞ্চালনায় এ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বিএফইউজে (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন রোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মুরসালিন নোমানীসহ সংগঠনগুলোর অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।