ঢাকা: নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী, স্পিকার, সংসদ নেতা, সংসদ উপনেতা নারী এটা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে দেখা যায় না।’
মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহিলা এবং শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ‘অধিকার মর্যাদায় নারী-পুরুষ সমানে সমান’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সারাবিশ্বে যারা মোড়লগিরি করে বেড়ায় সেসব দেশে নারী সরকার প্রধান দেখা যায় না।’
নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় নারীর জন্য প্রতিটি স্তরে ৩০ ভাগ সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করেছি। উপজেলাতে, মেয়র নির্বাচনেও এই সংরক্ষিত আসন রয়েছে। এইভাবে নারীদের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। এ সুযোগ তাদের কাজে লাগাতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতীয় সংসদে মেয়েদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। চাকরি ক্ষেত্রেও নারীদের ১০ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তিনি।’
মেয়েদের হাতে কাজ দিলে সেটা সুনিপুণভাবে করে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৯৬ সালে সরকারে এসে দেখি মেয়েরা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নেই। প্রথম নারী ডিসি, এসপি, সচিব করতে গিয়ে প্রচণ্ড বাধা আসে। হাইকোর্টে কোনো নারী জজ ছিল না। প্রথম নারী জজ দিতেই হবে একথা চিফ জাস্টিজকে বললাম।’ দুর্নীতিতে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা কম জড়ায় বলেও যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিতা মা-বোনদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মর্যাদা দিয়েছি। মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করেছি। স্বামী পরিত্যাক্তাদের জন্য বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করেছি। নারী উন্নয়ন নীতি করেছি। ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার করা হচ্ছে। যৌতুক নিরোধ আইন আরো সুযোপযোগী করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আগে সন্তানের পরিচয়ে শুধু বাবার নাম থাকতো, আমরা ১০ মাস কষ্ট করার পরও আমাদের পরিচয় থাকতো না। ইসলামে মায়ের পায়ের নিচে বেহেশত। আমরা বাবার পাশাপাশি সন্তানের পরিচয়ে মায়ের নাম ও অন্তর্ভুক্ত করেছি।’
আজকের আমাদের দেশের মেয়েদের ভিতরে আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, ‘খেলা–ধুলায়ও মেয়েরা অনেক এগিয়ে গেছে। সাঁতার এবং ভার উত্তোলনে স্বর্ণ জয় করছে মেয়েরা। অর্থনীতিতেও মেয়েরা বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছেন। নারীরা আজ এভারেস্ট শৃঙ্গেও জয় করছেন।’
নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি।