ঢাকা : ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি) নির্বাচনের আশ্বাস দিয়ে সরকার বিএনপির আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নাগরিক ছাত্র ঐক্য আয়োজিত ‘চলমান রাজনৈতিক সংকট : আমাদের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। মান্না বলেন, ‘একরাতের মধ্যেই ঢাকার ভোটার তালিকা এবং সীমানা নির্ধারণ হয়ে গেলো। এ সরকার আর আলাদিনের দৈত্যের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সরকার মূলত এখন ডিসিসি নির্বাচনের আশ্বাস দিয়ে বিএনপি জোটের আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করছে।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি ভাবেন আবার বিরোধী দল ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় নির্বাচন করে ফেলবেন, সেটা হবে না। ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেব না। আপনারা যাদের গলা চিপে ধরেছেন আমরা তাদের কাছে যাবো। জনগণই মাঠ দখল করে নিবে। গণতন্ত্র ও জনগণের স্বার্থে আমরা আছি। মানুষ আমাদের সাথে থাকবে।’ চলমান রাজনৈতিক সংকট প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এদেশের ইতিহাসে এমন সংকটে আমরা কখনোই পরিনি। ৪৫ দিন পার হয়েছে, সামনের ৪৫ দিনে কি হবে সেটা হাসিনা-খালেদা কেউ জানে না।’ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টায়ই এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আর এ নির্বাচনের সংকটই সন্ত্রাসে প্রকাশ পেয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মান্না বলেন, ‘সন্ত্রাসের দোহাই দিয়ে বিএনপির নির্বাচনের দাবিকে পাশ কাটিয়ে যাবেন, কিন্তু একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনতো এখন জনসাধারণের দাবি।’ পেট্রোল বোমা হামলায় মানুষ পুড়িয়ে মারার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কারা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করুন, একই সাথে বিনা বিচারে মানুষ হত্যার দায়ভারটা আপনাদেরকেই নিতে হবে। কারণ হত্যা তো হত্যাই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সংলাপের কথা বললেই আপনারা বলছেন সন্ত্রাসকে উসকে দিচ্ছি। মনে হয় সন্ত্রাসীরা আমাদের উৎসাহ নিয়ে সন্ত্রাস শুরু করেছিল।’ তিনি বলেন, প্রয়োজনে আমরা সন্ত্রাস এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রের জন্য মাঠে নামবে।’ সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি তৈরি করবেন না যাতে গণতন্ত্রের বিপদ হয়। অন্যায় অত্যাচার যা-ই করেছেন। একটা জাতীয় সংলাপ করুন। এতোবড় সংকটে মানুষ কথা বলবে সেটাই স্বভাবিক। সংলাপ করলে তাড়াতাড়ি করুন নয়তো পরে কথা বলারও সময় পাবেন না।’ তিনি বলেন, আজ দেশে যে সংকট চলছে ইতিহাসে এমন সংকটে বাংলাদেশ কখনও পড়েনি। বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান, ছাত্রনেতা আহমেদ রুপু, রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ প্রমুখ।