পিনাক-৬: দুর্ঘটনার ১৫ কারণ, উদ্ধারে প্রকৃতি বাধা

0

017832102_40100-e1407257393606ঢাকা: সম্প্রতি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ পিনাক-৬ উদ্ধার করতে না পারার বিষয়ে বাধা হিসেবে প্রকৃতিকেই দুষলেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। এজন্য প্রশাসনিক বা প্রযুক্তিগত কোনো ব্যর্থতা ছিল না বলে তার দাবি। তবে স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত ৫৫৮টি নৌ দুর্ঘটনায় সাড়ে ৪ হাজার লোকের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানান তিনি।

সোমবার দশম জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনের প্রথম বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদকে এ তথ্যই দেন মন্ত্রী।

উল্লেখ্য, সরকারের অনীহার কারণেই পিনাক-৬ উদ্ধার হয়নি বিভিন্ন মহলের এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।  এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী সংসদে বলেন, ‘প্রকৃতি বিরূপ আচরণ না করলে হয়তো লঞ্চটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হতো।’ তবে এই দুর্ঘটনার জন্য চালকদের ভুল সিদ্ধান্তসহ আরো ১৫টি কারণ উল্লেখ করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘লঞ্চটি পদ্মায় ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম এবং নির্ভীককে। এতে বিআইডবিব্লউটিএ, নৌ-বাহিনী, ফায়ার ব্রিগেড, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ বিভাগসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। একটানা ৭ দিন উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হয়। লঞ্চটি শনাক্ত করার জন্য সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সাইডস্ক্যান সোনার, মাল্টিবিম ইকো সাউন্ডার, সিঙ্গেলবিম ইকো সাউন্ডার এবং সাব বোটম প্রফাইলার ব্যবহার করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘উদ্ধার কার্যক্রমের ৬ দিনে চট্টগ্রাম বন্দরের কান্ডারী-২ সিঙ্গেল বিম ইকো সাউন্ডার দিয়ে একটি ধাতব বস্তু শনাক্ত করা হয়। কিন্তু পদ্মা নদীতে প্রতি ঘণ্টায় ৬ নটিক্যাল মাইলের অধিক স্রোত ও পানির নিচে ঘূর্ণি থাকায় এবং নদীর গভীরতা ৭০ ফুট হওয়ায় নৌ-বাহিনী, বিআইডব্লিটিএ এবং ফায়ার ব্রিগেডের প্রশিক্ষিত ডুবুরিগণ চিহিৃত স্থানে যেতে পারেননি। ফলে শনাক্তকৃত ধাতব বস্তুটি উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। এরপর ৮ম দিনের মাথায় উদ্ধারকারী দলের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে পিনাক-৬ উদ্ধার কার্যক্রম পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।’

ময়মনসিংহ-৭ আসনের এমপি এম এ হান্নানের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে পিনাক-৬ ডুবে যাওয়ার ১৫টি কারণ নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, মাস্টার, চালকদের ভুল সিদ্ধান্ত, যাত্রীদের অজ্ঞতা ও অসচেতনতা, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্কের কারণে এদিক সেদিক ছুটা-ছুটির ফলে লঞ্চটি ভারসম্য হারিয়ে ডুবে যায়।’

শাজাহান খান বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে এ পর্যন্ত লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের ১ কোটি ৯০ লাখ ৮১ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এরমধ্যে নিহত যাত্রীদের পরিবারকে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৮০ হাজার এবং দাফন বাবদ ১২ লাখ ১ হাজার টাকা দেয়া হয়।’

স্বাধীনতার পর নৌপথে এ পর্যন্ত ৫৫৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘এতে ৪ হাজার ৫০০ লোক মারা যায়। শুধু লঞ্চ দুর্ঘটনায়ই মারা যায় ৩ হাজার ৬৮৩ জন। অন্যান্য নৌ-যান দুর্ঘটনায় আরো ৮১৭ জন মারা যায়।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More