ভিক্ষুক দেখে অনেক মানুষের মধ্যেই মায়া হয়। দুই-চার-পাঁচ বা এর বেশি যাই হোক কিছু অর্থ তাদের ভিক্ষা দেন তাঁরা। কিন্তু সেই ভিক্ষুক যদি হয় কোটিপতি? হ্যা, সম্প্রতি এমনই এক ভিক্ষুকের সন্ধান পাওয়া গেছে যার সম্পত্তির পরিমান প্রায় এক কোটি ২০ লাখ রুপি।
ভারতের বিহার রাজ্যের পাটনা রেলওয়ে জংশনে ভিক্ষা করেন শারীরিক প্রতিবন্ধী পাপ্পু কুমার। স্টেশনে থাকা অন্য অন্য ১০জন ভিক্ষুকের মতো গত সাত বছর ধরে সেটাই তার পেশা, ষ্টেশনই তার ঠিকানা। তবে পুলিশ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অংশ হিসেবে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল। এদিকে পাপ্পুও নিজের জায়গায় অনড়। এ ষ্টেশন ছেড়ে সে কোথাও সরবে না। অনেকটা বাধ্য হয়েই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর তাতেই ফাঁশ হলো পাপ্পুর সম্পদের রহস্য।
দেখা গেল, তিনি কোটিপতি। তার সম্পত্তির পরিমাণ এক কোটি ২০ লাখ রুপি। এছাড়া চারটি ব্যাংকে তার জমা আছে আরো পাঁচ লাখ রুপি। পুলিশ তার দেহ তল্লাশি চালিয়ে চারটি ব্যাংকের এটিএম কার্ড খুঁজে পেয়েছে। এসব ব্যাংকেই তার পাঁচ লাখ রুপি জমা আছে। পুলিশ আরো জানতে পারে, এই ভিক্ষুক একসময় ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিলেন। পরে ভাগ্যের পরিহাসে ভিক্ষুকে পরিণত হয়।
৩১ বছর বয়স্ক পাপ্পু জানায়, ৫৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে তিনি ইন্টারমিডিয়েট পাস করেছিলেন। গণিতে পেয়েছিলেন ৭২ নম্বর। সে সময় এই ফলাফল নিয়ে সহজেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হতে পারতেন। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা তার সব স্বপ্ন কেড়ে নেয়। তিনি প্যারালাইজড হয়ে গেলেন। শরীরের বাম অংশ অবশ হয়ে গেলে তার পরিবার সদস্যরা তাকে ত্যাগ করে। সে সময় ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোনো গতি ছিল না পাপ্পুর।
তিনি আরো জানান, বাবার মৃত্যুর পর তিনি পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে প্রায় ৩৬০ বর্গফুট জমি পেয়েছিলেন। সেটা বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ রিয়াল এস্টেট ব্যবসায় লাগান। আর সময়ের সাথে বাড়তে বাড়তে সে সম্পদের বর্তমান মুল্য এক কোটি ২০ লাখ রুপি। ভিক্ষা করা ছাড়াও লোকজনের দরকারে টাকা ধার দেন তিনি। পুলিশ তাকে পরামর্শ দিয়েছিল, ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে নিজের চিকিৎসা করিয়ে সুখী জীবনযাপন করতে। কিন্তু তাতে আগ্রহ দেখায়নি কোটিপতি এ ভিক্ষুক।
তার বক্তব্য ছিল, “শারীরিকভাবে সুস্থ হলে আমাকে ভিক্ষা দেবে কে?”