নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভা নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডে অনিয়মের অভিযোগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী, নরসিংদী সদর উপজেলার বিরামপুরের হাজী ইসমাইলের ছেলে মো. ওবায়দুর রহমান টিটু।
মামলায় বিবাদী করা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কশিনার, নরসিংদী জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং অফিসার, নরসিংদী সদর নির্বাচন কমিশনার, কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. জয়নাল আবেদীন, বিজয়ী কাউন্সিলর মো. শেখ ফরিদ ও অপর পরাজিত প্রার্থী মো. ইসমাইলকে। বাদীর পক্ষে আইনজীবী এম. নাদিম হোসেন খান নাঈম ও মো. মোক্তার হোসেন মীর উল্লেখিত বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন নোটিশ জারির জন্য আবেদন জানান। বিজ্ঞ আদালত উক্ত সাত জনের বিরুদ্ধে সমন নোটিশের আদেশ প্রদানসহ এবং মামলাটির পরবর্তী ১ মার্চ তারিখে শুনানির দিন ধার্য্য করেন।
বাদী তার মামলার বিবরণে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার দেশের মেয়াদ উর্ত্তীন পৌরসভার নির্বাচন সম্পন্ন করার তফসিল ঘোষণা করেন। সে মোতাবেক তিনি সংশ্লিষ্ট নির্বাচর কমিশনার হতে মাধবদী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিল পদে মনোনয়নপত্র ক্রয় করে জমা প্রদান করেন। পরে কমিশনার কর্তৃক তাকে পানির বোতল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়।
মামলার বিবাদী শেখ ফরিদ উট পাখি প্রতীক ও মো. ইসমাইলকে পাঞ্জাবী প্রতীক বরাদ্দ পান। এ প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে ৩১ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হলে শেখ ফরিদ উটপাখি প্রতীকে পরাজিত হবে বুঝতে পেরে অপর প্রার্থী মো. ইসমাইলের (পাঞ্জাবী প্রতীক) যোগসাজশে সন্ত্রাসী লোকজন নিয়ে ভোট কেন্দ্রে হামলা চালায়। পরে রিটার্নিং অফিসার মাধবদী পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করেন। এ প্রেক্ষিতে বাদী নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে স্থগিত পৌরসভায় নির্বাচন কমিশনার পুনঃরায় (চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি) ভোটগ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেন।
এ নির্বাচন চলাকালে কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ ফরিদ (উটপাখি) তার লোকজন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে ককটেল, বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উটপাখি প্রতীকে সিল মারেন। এঘটনায় তাৎক্ষনিক তিনি বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। পরে ভোট কেন্দ্রের পরিস্থিতি শান্ত হলে সাধারণ ভোটাররা পুনঃরায় ভোট প্রদান করেন। বিকেল ৪টার পর বাদী মো. ওবায়দুর রহমান টিটুর এজেন্ট আমিনুল ইসলামের সামনে ভোট গনণা হলে তার প্রতীক পানির বোতল প্রতীক জয়ী হয়। পরে উটপাখি প্রতীকের এজেন্ট বিষয়টি বুঝতে পেরে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশের যোগসাজসে পানির বোতলের ভোট উটপাখি প্রতীকের বান্ডেলের মধ্যে ঢুকিয়ে তার এজেন্টের কোন স্বাক্ষর ছাড়াই ১,৪০৪ ভোটে উটপাখি প্রতীক বিজয়ী হয়েছে বলে ঘোষণা করেন। তার পানির বোতল প্রতীকে ৮১৫ ভোট প্রাপ্ত ঘোষণা করলেও মোট ২,৯০৭ ভোটের মধ্যে কত ভোট বাতিল হয়েছে এবং ৩য় জন কত ভোট প্রাপ্ত হয়েছেন তা ঘোষণা করা হয়নি। এ বিষয়ে তিনি ১৭ জানুয়ারি রিটার্নিং অফিসারের নিকট আবেদন জানালে তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। অবশেষে তিনি উক্ত মামলাটি দায়ের করেন।
Prev Post
Next Post