জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃতির সঙ্গে তৃতীয় কোন শক্তি জড়িত রয়েছে বলে উল্লেখ করে ব্যবসায়ী নেতা, এমপি এম এ লতিফ বলেছেন, ‘জড়িতদের আমি খুঁজে বের করবোই। বিভ্রান্তি ও কালিমা থেকে মুক্ত হতে এ মর্হুতে এটাই আমার দায়িত্ব।’ ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টারে শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন সাফাই বক্তব্য দিলেন এম এ লতিফ।
চট্টগ্রাম চেম্বারের আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে কারো নাম উল্লেখ না সাংসদ এমএ লতিফ অভিযোগ করেন গত সাত বছর ধরে একটি মহল তার পেছনে লেগে আছে। তারা বারবার তাকে বির্তকিত করে নানাভাবে হেনস্থ করছেন। তারাই এমন কাজ করতে পারে বলে ইঙ্গিত করেন তিনি। কথিত বিরোধীতাকারি মহলের বিষয়ে খোলসা না করে তিনি বলেছেন, ‘তারা জনগণের সঙ্গে ভালো কাজ করে নেত্রীর কাছাকাছি যেতে না পেরে উল্টো আমাকে বিভিন্নভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে নেত্রীর কাছ থেকে সরাতে চাচ্ছে।’ কেন ওই মহলটি আপনার পেছনে লেগে আছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি বন্দর সচল রাখতে চাই। বন্দরের উন্নয়ন চাই। সে কারণে তারা আমার পেছনে লেগে আছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জানুয়ারি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উদ্বোধনসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম সফর করেন। প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে এম এ লতিফের শরীরের অংশের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মুখমন্ডল স্থাপন করা শ’শ ফেস্টুন বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর কর্মকান্ডে নিয়ে নিজের রচিত শ্লোক উল্লেখ করে চট্টগ্রাম শাহআমানত বিমান বন্দর থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত সড়কে টানানো হয়। যা পরবর্তীতে সামাজিক গণমাধমের সূত্রে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন চৌধুরী সমর্থিত বড় অংশটি তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। মিছিল, সমাবেশ করে তার গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করে। এমনকি হাজার কোটি টাকার মামলাও হয় আদালতে। এ প্রেক্ষাপটে নবনির্মিত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ঘটনার এক সপ্তাহ পর শনিবার চট্টগ্রাম চেম্বারের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন চট্টগ্রাম ১১ আসনের আলোচিত সাংসদ এমএ লতিফ। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন ‘সংসদ অধিবেশন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হতে বিলম্ব হয়েছে’!
ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টাররে বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও তা বঙ্গবন্ধুর ছবি বির্তক ছিল মূল আলোচিত বিষয়।
সাংসদ এম এ লতিফ তার বক্তব্য উল্লেখ করেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি সর্বপ্রথম তার ছেলের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখেছেন। তার দাবি ওই ছবিতে বঙ্গবন্ধুর মুখমন্ডলের সঙ্গে তার শরীরের অংশ জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এটা দেখে তিনি নিজেই অবাক হয়েছেন উল্লেখ করে বলেছেন এ গর্হিত কাজ তিনি কেন করবে? আমি যেখানে নিজের ছবিটাকে বিভিন্ন শ্লোক দিয়ে প্রচার করতে পারতাম।’
‘আমার শরীরকে বঙ্গবন্ধুর মাথার সঙ্গে জুড়ে আমি কোথায় কি বেনিফিট পাব? এ প্রশ্নটি আপনাদের কাছে রইলো। কারণ আমি নিজের ফটো দিয়ে তো আমার শ্লোকগুলো ব্যবহার করতে পারি।’ তবে সংবাদ সম্মেলনে ওই ছবির নিচে উল্লেখ করা শ্লোক গুলো তার নিজের রচিত বলে জানান সাংসদ লতিফ।
ইতিমধ্যেই বিষয়টি তিনি আওয়ামী লীগের উপরের মহলে অবহিত করেছেন উল্লেখ করে আলোচিত সমালোচিত সাংসদ এমএ লতিফ বলেন, ‘এ বিভ্রান্তি কাটানোর জন্য আমাকেই ঘটনার সঙ্গে জড়িতকে খুঁজে বের করতে হবে। কে এটি করেছে তাকে ধরিয়ে দিতে হবে, তাকে বের করতেই হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম চেম্বারের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি নুরুন নেওয়াজ, সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ। এছাড়া চেম্বার পরিচালক অহিদ সিরাজ স্বপনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
Prev Post
Next Post