বাংলাদেশের ১০ কোটিরও বেশি মানুষ এখন কর্মক্ষম, যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ। এদের বয়স ১৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে। এই কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী ২০৩০ সালের মধ্যে বেড়ে দাঁড়াবে ৭০ শতাংশে। কিন্তু ২০৩০ সালের পর কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমতে শুরু করবে অর্থাৎ বয়স্ক ও কাজ করতে অক্ষম, নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। গতকাল মঙ্গলবার হোটেল সোনরাগাঁওয়ে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ‘এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানব উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এবং সফররত জাতিসংঘের অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও ইউএনডিপির এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক হাওলিয়াং জু।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠান শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএনডিপির বাংলাদেশ আবাসিক সমন্বয়ক রবার্ট ওয়াটকিন্স বলেন, বাংলাদেশে যে বিশাল শ্রমবাজার তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে তা কাজে লাগানোর জন্য সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়তে বিনিয়োগ ও বহুমুখী শিল্পায়নে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাওলিয়াং জু, ইউএনডিপির সিনিয়র স্ট্র্যাটেজিক উপদেষ্টা ও প্রধান অর্থনীতিবিদ থাঙ্গাভেল পালানিভেল।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিক নানা সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আরো দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব। এক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চাকরি সুযোগ, সুশাসন ইত্যাদি। এসব প্রতিবন্ধকতা নিরসন করতে হবে।
ইউএনডিপির অর্থনীতিবিদ ও এ প্রতিবেদনের সহযোগিতাকারী তাসনিম মির্জা বলেন, বাংলাদেশে যে পরিমাণ তরুণ জনশক্তি রয়েছে- তা যে কোনো দেশের জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। তবে এদেশের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হলো কর্মক্ষেত্রের বৈচিত্র্য কম। তথ্যপ্রযুক্তি, ব্যাংকিংসহ নানা ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ নেই বললেই চলে। দেশে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। এছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোরও পরামর্শ দেন তিনি।
তাসনিম মির্জা আরো বলেন, কিছুদিন পরই এই তরুণ জনশক্তি বয়সের ভারে নুয়ে যাবে। তাই এখনই যদি তাদের কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন না করা হয়, তাহলে বাংলাদেশ ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্যোগের মধ্যে পড়তে পারে। তিনি ইউরোপের উদাহরণ টেনে বলেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক লোক রয়েছে ইউরোপে। তবে তাদের এই বৃদ্ধ জনগোষ্ঠী ধীরে ধীরে বেড়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ততটা সময় পাবে না। ফলে এখনই এই প্রজন্মকে কাজে লাগাতে হবে।
Next Post