অবসরে যাওয়ার পর রায় লেখার বিষয়ে প্রধান বিচারপতি দেয়া বক্তব্য নিয়ে বিএনপি অসৎ রাজনীতি করতে চেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। তিনি বলেছেন, বিচার প্রক্রিয়ার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা আদালত ও বিচার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। বিষয়গুলো জনসম্মুখে না আনাই ভালো।
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন। ডেপুটি স্পিকার বলেন, সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি বেশ কিছু বক্তব্য রেখেছেন। যা অতীতে কোন প্রধান বিচারপতিকে করতে দেখা যায়নি। বিচার প্রক্রিয়ার বিষয়গুলোর আলোচনা বিচারকদের মধ্যেই রাখা উচিত। এটাকে জনসম্মুখে না বলাই উচিত। এভাবে উন্মুক্তভাবে আলোচনা বিচার বিভাগের জন্য ভালো নয়। তিনি আরো বলেন, প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রের একটি অঙ্গের প্রধান। তাই এভাবে তার বক্তব্য আসা শ্রেয় নয় বলে মনে করি।
ডেপুটি স্পিকার বিচার সংক্রান্ত বিষয়ে উন্মুক্তভাবে বক্তব্য না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবসরের পর রায় লেখা যাবে না, এমন কোন নিদের্শনা সংবিধানে নেই। তাছাড়া যেই বিচারক তার অবসরে যাওয়ার আগের দিন রায় দেবেন, সেই রায়ের বিষয়ে তিনি কী করবেন? একজন বিচারকের জন্য ওইদিনের কজলিস্টে কমপক্ষে দেড়শ মামলা থাকে। সেক্ষেত্রে একদিনে একজন বিচারককে ৬০/৭০টি মামলার রায় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিতে হয়। সেক্ষেত্রে অবসরে যাওয়ার আগের দিন তিনি কিভাবে এতগুলো মামলার রায় লিখবেন? তাকে তো সময় দিতেই হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে ডেপুটি স্পিকার বলেন, বিএনপি বিষয়টিকে ইস্যু বানাতে চেয়েছিলো। কিন্তু তাদের সে চেষ্টার হালে পানি পাইনি। এটা আসলে রাজনৈতিক ইস্যু হতে পারে না। এবিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, কোন কোন বিচারপতি রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন। অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধানপরিপন্থী। সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতিগণ সংবিধান, আইনের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ গ্রহণ করেন। কোন বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না। আদালতের নথি সরকারী দলিল (পাবলিক ডকুমেন্ট)। একজন বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর আদালতের নথি নিজের কাছে সংরক্ষণ, পর্যালোচনা বা রায় প্রস্তুত করা এবং তাতে দস্তখত করার অধিকার হারান। আশাকরি বিচারকগণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এমন বেআইনী কাজ থেকে বিরত থাকবেন।
Prev Post
Next Post