ফিলিস্তিনে ইসরাঈলী বর্বরতার প্রতিবাদে দেশব্যাপী ঘোষিত কর্মসুচীর অংশ হিসেবে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিশাল গণমিছিল পূর্ব জমায়েতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ আহমাদ বলেছেন, ফিলিস্তিনের গাজায় নিরীহ মুসলমানদের ওপর সন্ত্রাসী, বর্বর ও অভিশপ্ত ইসরাঈলী নির্মম নির্যাতন ও পাশবিকতা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে মর্মাহত ও ব্যথিত করেছে এবং এর মাধ্যমে ইসরাইল বিশ্বে একটি চরম অভিশপ্ত এবং বর্বর জাতি হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। আর আরবলীগ, ওআইসিসহ বিশ্ব ইসলামী নেতৃবৃন্দ নিরব ভূমিকায় তারা মুনাফিক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অপরদিকে এক কয়েতী ধর্মীয় নেতা ইসরাইলের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ায় তার নাগরিকত্ব বাতিল করে ইসরাইলের পক্ষ অবলম্বন করে মুসলিম উম্মাহকে মর্মাহত করেছে। তিনি ইহুদি পণ্য বর্জনের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
আজ শনিবার বিকাল ৩টায় ফিলিস্তিনে ইসরাইলের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ, যুদ্ধাপরাধী ইসলাইলের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার এবং ইহুদি পণ্য বর্জনের দাবীতে অনুষ্ঠিত গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঢাকা জেলা মহানগরের সমাবেশে যোগদান করেন। নগর সভাপতি অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন য্গ্মু মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, সেক্রেটারী মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ঢাকা জেলা সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সুলতান আহমদ খান, সেক্রেটারী হাজী শাহাদাত হোসেন, ছাত্রনেতা আরিফুল ইসলাম, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, প্রচার সম্পাদক মাওলানা এইচ এম সাইফুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা হারুন অর রশিদ, মাওলানা আনসার আহমদ পীর সাহেব কুমিল্লা, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ ওমর ফারুক, এডভোকেট সর্দার মোঃ মানিক মিয়া, শাহআলম মানিক, মাওলানা বাছির উদ্দিন মাহমুদ, নুরজ্জামান সরকার, মাওলানা নূর হোসেন প্রমুখ। সমাবেশশেষে একটি বিশাল গণমিছিল বের হয়ে কদমফোয়ারা, প্রেমক্লাব, পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা হয়ে বায়তুল মুকাররম উত্তর গেটে এসে শেষ হয়। গণমিছিলটি স্মরণকালে বড় মিছিলে রূপ নেয়। এসময় হাজার হাজার পথচারী মিছিলকে অভিবান জানান। গগণবিদারী শ্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত হয়ে উঠে। প্রথমে সমাবেশে পুলিশ মাইক ব্যবহার অনুমতি দেয়নি। সময়ের ব্যবধান হাজার হাজার জনতার উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশ পাশকেটে চলে যায়।
মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ আরও বলেন,ইসরাইলের এত বড় শক্তি হয়নি তারা মসুলমানদের বিরুদ্ধে লড়বে। আমেরিকা ও লন্ডনের মদদে তারা মুসলমানদের বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শন করে অব্যাহত হামলা করে যাচ্ছে। আরব বিশ্ব চুপ করে থাকলেও আমরা ঈমানের তাগিদে ময়দানে নেমে এসেছি। ইসরাইল তাদের হত্যাযজ্ঞ বন্ধ না করলে বিশ্ব মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধভাবে জেহাদের ডাক দেয়া ছাড়া বিকল্প পথ বাকী থাকবে না। তিনি আরও ইসরাইলের এই বর্বরতাকে এখনই রুখে দিতে না পারলে বিশ্ব মুসলিমকে চরম খেসারত দিতে হবে। তাই বিশ্ব মুসলিমকে তিনি বাংলাদেশ সরকারকে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিবৃতিতে দেওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিশ্বজনমত গঠনে কার্যকর উদ্যোগ নিলে বিশ্বমুসলিম বাংলাদেশ সরকারের সাথে থাকবে বলে মন্তব্য করেন। তিনি ইহুদিদের অব্যাহত জুলুমের প্রতিবাদে ২০ আগস্ট শ্রমিক মানববন্ধন, ২২ আগস্ট ছাত্র সমাবেশ এবং ২৯ আগস্ট সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসুচী ঘোষণা করেন।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ইসরইল মূলত: সকল ধর্মের শত্রু। আর সবচেয়ে বড় শত্রু ইসলামের। এই কারনেই হিটলার ৬০ লাখ ইহুদি হত্যা করে কিছু অভিশপ্ত ইহুদি রেখে দিয়ে বলেছিলেন ইহুদির স্বরূপ বিশ্ববাসীকে বুঝার জন্য রেখে দিলাম। তিনি বাংলাদেশ সরকারের কিছু মন্ত্রীর উস্কানীমূলক বক্তব্য “হুজুররা কোথায়, তারা কেন ফিলিস্তিনের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিবাদ করছে না” এধরণে বক্তব্যের জবাবে বলেন, লন্ডনে লক্ষ লক্ষ জনতার মিছিল হয়েছে সেখানে তো কোন হুজুর কিংবা এত মুসলমান নেই, তারা এত বড় প্রতিবাদ করেছে, আপনার সরকার বড়ধরণের প্রতিবাদ করছে না। এধরণের মুনাফেকী আচরণ পরিহার করুন।
মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, মুসলমানদের এখন বড় জেহাদ হলো ইহুদি ও মার্কিণ পণ্য বর্জনের জেহাদে শরীক হওয়া। তাই ইহুদিদের অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিতে এই জিহাদ চালিয়ে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেন, জারজ রাষ্ট্র ইসরাইল মার্কিনের মদদে ফিলিস্তিনের অসহায় নারী পুরুষ ও শিশুদেরকে যেভাবে হত্যা করছে হিংস্রতাকেও হার মানায়। আর আরবদেশগুলো নিরবে সহ্য করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, সৌদী আরব ফিলিস্তিনে হামলা অব্যাহত রাখার জন্য জাতিসংঘের মাধ্যমে হাজার হাজার ডলার অনুদান দিয়ে মুসলমানের কলিজ্বায় প্রতিবাদের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। তিনি আরবদেশগুলোর নিরবতায় প্রচন্ড ধিক্কার জানিয়ে বলেন, হিংস্র হায়েনার দল জায়নবাদী ইসরাঈল সম্মিলিতভাবে বিশ্বের বুক থেকে মিটিয়ে দিতে হবে। কিন্তু আরবদেশগুলো কার ইশারায় চলছে তা বোধগম্য নয়। তিনি বিশ্বব্যাপী মার্কিন ও ইসরাইলী পণ্য বর্জনের জন্য মুসলিম বিশ্ব বিশেষ করে বাংলাদেশের মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানান। যারা নিরীহ রোজাদার মুসলমানদের রক্ত ঝরায় এবং শত শত মুসলমান শহীদ করে তারা অভিশপ্ত জাতি
Next Post