ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) গুলিতে গত ১৩ মাসে ১৮ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে তথ্য দিয়েছে আইন ও শালিস কেন্দ্র (আসক)। মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, দেড় ডজন বাংলাদেশি নিহত ছাড়াও বিএসএফের নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন আরও ৪ জন। আর গুলিতে আহত হয়েছেন আরও ১৯ জন।
বুধবার মানবাধিকার কর্মীদের নিয়ে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংলাপে আসক এসব তথ্য জানায়। নীনা গোস্বামীর সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তব্য দেন অ্যাডভোকেট শাহনাজ, রিপন বানাই, মাধব চন্দ্র দত্ত, উজমা মাশিয়াত, রফিকুল ইসলাম পান্না, রাশেদ রিপন প্রমুখ।
আসকের তথ্য বলছে, গত ১৩ মাসে দেশে ৯৭১ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এসময়ের মধ্যে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয় ১৬৫ জন নারীকে। নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর মারা গেছেন ৫০ জন নারী। আর নির্যাতনের পর আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন ৮৬ জন।
একইসময়ে যৌতুকের দাবিতে সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১৮৩ জন নারী। যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন ৮১ জন। এ নির্যাতনের শিকার হয়ে বিচার দাবিতে মামলা হয়েছে ১৩১টি।
আসক বলছে, গত ১৩ মসে একই সময়ে দেশে গুমের অভিযোগ উঠেছে ৫টি। এর মধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ১ জন ফিরে এসেছেন। বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে ২০টি।
একইসময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কথিত বন্দুকযুদ্ধে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কারা হেফাজতে ৮০ জন মারা গেছেন; ৩৪ জন কয়েদি, ৪৬ জন হাজতি। এর মধ্যে গত জানুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। এছাড়া গৃহকর্মীর প্রতি ৩১টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
মত প্রকাশের স্বীধনার ক্ষেত্র সংকুচিত করার অভিযোগ তুলে উপস্থাপনায় বলা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৩৬ বার ১৪৪ ধারা জারি করে সমাবেশ পণ্ড করেছে।
আসকের পরিচালক নূর খান বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছু মানুষকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করলে অস্বীকার করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু পরে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। গ্রেপ্তার দেখানোর আগে বলা হচ্ছে, ২৪ ঘণ্টা আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা এ রকম গুমের স্বীকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, তাদের এমন জায়গায় রাখা হচ্ছে যেগুলো আইন স্বীকৃত কোনো কারাগার নয়। সেখানে তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।’
ঢাকাটাইমস