
পতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে আমি তাঁর সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছিলাম। এই সাক্ষাত্ পেতে বেগম জিয়া খুবই উদগ্রীব ছিলেন। যদিও এই সাক্ষাতের কারণে শেখ হাসিনার সঙ্গে আমাদের যে চমত্কার সম্পর্ক রয়েছে তাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না তা নিয়ে আমাদের অনেক সতর্কভাবে হিসাব-নিকাশ করতে হয়েছিল। তবে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির যে দীর্ঘ দিন ধরে সুসম্পর্ক রয়েছে সেটা ভারতের রাজনৈতিক মহলের জানা বিষয়। সালমান খুরশিদ বইতে আরো লিখেছেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুভূত হয়েছিল যে, আমরা একটি সাফল্য আনতে পেরেছি এবং খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের বরফ গলেছে। যদিও এর আগে আমাদের সম্পর্ক অনেকটাই শীতল ছিল। কয়েক মাস পর বাংলাদেশ সফরকালে খালেদা জিয়া আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও আপ্যায়নের পর এই বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এমনকি খালেদা জিয়া বিরলভাবে আমাকে বিদায় জানিয়েছিলেন এবং বাইরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে রাজপথে একদিকে সরকার সমর্থক ও তরুণ উচ্চাকাঙ্ক্ষী জাতীয়তাবাদী (গণজাগরণ মঞ্চ) এবং অন্যদিকে কট্টর জামায়াতে ইসলামীর কদর্য সংঘাতের ঘটনায় প্রাথমিক সেসব ইতিবাচক লক্ষণগুলো গুলিয়ে যায়। আর সে সময় আমাদেরকে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ শিবিরের দিকে ঝুঁকতে হয়। ভারতের এটি বেছে নিতেই হয়েছে। এক্ষেত্রে অবস্থান নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া এবং সেজন্য সুযোগ হারানোটা সত্যিই বিপজ্জনক ছিল। তিনি বইতে লিখেছেন, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর এবং ছিটমহল বিনিময়। কিন্তু এক বছর পর ২০১৫ সালের জুনে যখন ছিটমহল বিনিময় হলো তখন কংগ্রেস ক্ষমতার বাইরে। আর তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিটি এখনো ঝুলে রয়েছে যদিও ভারতের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে এ বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে।
উৎসঃ ইত্তেফাক