ঢাকা: মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম বার্মা টাইসে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত ‘বার্মিজ ইউনাইটেড আর্মড ইউনিট’ এবং গত শুক্রবার বিজিবি-বিজিপি গোলগুলিতে মিয়ানমারের ৪ বিজিপি সদস্য নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছে এমন খবর প্রকাশে কোনো অসুবিধা নেই বলেও জানান তিনি।
সোমবার রাত ৮টা ৫০ মিনিটে পররাষ্ট্র সচিবের মুঠোফোনে আলাপকালে বাংলামেইলের এ প্রতিবেদককে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে ৩০ মে বার্মা টাইসম প্রকাশ করে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লড়তে সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ‘বার্মিজ ইউনাইটেড আর্মড ইউনিট’ (বিইউএইউ)। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) টহল দল সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে সামনে এগোলে তা মোকাবিলা করতে ভালোভাবেই প্রস্তুত। বার্মিজ সেনাবাহিনীর একজন মেজরের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ‘বার্মা টাইমস’।
তবে নিরাপত্তার কথা জানিয়ে তারা ওই কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেনি। ওই মেজর বলেন, ‘বার্মা-বাংলাদেশ সীমান্তে বিইউএইউকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের ব্যাপারে মিয়ানমার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবং টাটমাডাও (সেনাবাহিনী) টেকনাফ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল পর্যন্ত দখল করে নেয়ার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ!’
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) বিজিবির টহল দলের উপর গুলি চালালে সুবেদার মিজানুর রহমান নিহত হন। এ ঘটনার পর সীমান্তে দুই পক্ষেই উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এছাড়া মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে প্যারামিলিটারি, পুলিশ, বিজিপি, নৌ ও সেনাবাহিনী এবং ইন্টিলিজেন্স ডিপার্টমেন্টের সমন্বয়ে গঠিত ‘বার্মিজ ইউনাইটেড আর্মড ইউনিট’কে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ-বার্মা সীমান্তের ‘দক্ষিণ গেইটে’ তৎপর হতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
সীমান্তের দক্ষিণ গেইট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত হওয়ায় স্থানীয় রোহিঙ্গারা আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যেই আর্মড ইউনিটের সদস্যরা ভারী মালামাল বহনে রোহিঙ্গাদের কাজে লাগিয়েছে। এছাড়া সীমান্তে উত্তেজনার সুযোগে রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে বার্মা টাইমস।
তবে এসব সংবাদকে একদমই পাত্তা দিচ্ছে না বাংলাদেশ সরকার। সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক বাংলামেইলকে বলেন, ‘বর্তমানে মিয়ানমার সীমান্ত খুবই শান্ত অবস্থায় রয়েছে। বিজিবির মহাপরিচালকের মিয়ানমার সফরের পর আগামী ১৮ জুন সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে দু’দেশের মধ্যে নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা, বিসিআইএম গঠন বিষয়ে আলোচনা হবে।’