রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বুলবুল সাময়িক বরখাস্ত

0

ajbul_259927রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে তাকে বরখাস্ত করে। গত ৫ জানুয়ারির পর আত্মগোপনের আছেন মেয়র বুলবুল।

প্রজ্ঞাপনে বলা আছে, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা নম্বর ৩৮, ৩৭, ৪১, ০৮- এর চার্জশিট চিফ মেট্রোপলিট্রন আদালতে দাখিল করা হয়েছে। চিফ মেট্রোপলিট্রন আদালতে তা গৃহিত হয়েছে, সেহেতু মেয়র মোসাদ্দেক হোসেনকে স্থানীয় সরকার আইন (সিটি করপোরেশন) ২০০৯ এর ধারা ১২ উপধারা (১) এর প্রদ্ত্ত্ব ক্ষমতা বলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল।

বুধবার এ সংক্রান্ত ফাইলে অনুমোদন দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র জানায়, মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল অপসারিত হচ্ছেন এমন গুঞ্জন এক সপ্তাহ থেকে শোনা যাচ্ছিলো। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে আওয়ামী লীগ সমর্থক প্যানেল মেয়ররা দায়িত্ব পেতে পারেন। সিটি মেয়রের বিরুদ্ধে আদালত চার্জশিট গ্রহণ করায় পুলিশের আবেদনের পর তাকে সাময়িক অপসারণের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, ২৩ এপ্রিল বুলবুলকে অপসারণের যাবতীয় প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত একজন প্যানেল মেয়র বা সিনিয়র একজন কাউন্সিলর মেয়রের দায়িত্ব পাচ্ছেন। স্থানীয় সরকারের আইনে (সিটি কর্পোরেশন) যে কোনো মেয়র বা কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় আদালত চার্জশিট গ্রহণ করলে তাকে সাময়িক অপসারণের বিধান রয়েছে। স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ধারা ১২-তে মেয়র ও কাউন্সিলরদের সাময়িক বরখাস্তকরণের বিষয়টি এতে উল্লেখ করা হয়েছে। নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলায় রাজশাহী সিটি মেয়র পলাতক রয়েছেন।

রাজশাহীতে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরে নাশকতা, সহিংসতা, জানমাল ও সম্পদ বিনষ্টে ভয়াবহতা এবং বিস্ফোরক আইনে মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের বিরুদ্ধে রাজশাহী মডেল থানায় কয়েকটি মামলা হয়। তার বিরুদ্ধে পুলিশের দেয়া চারটি মামলার চার্জশিট আদালত গ্রহণ করেন। সম্প্রতি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমেদ বিষয়টি জানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেন। এতে মেয়র বুলবুলকে সাময়িক বরখাস্তের কথা বলা হয়েছে।

সাময়িক বরখাস্তকরণের প্রস্তাবনায় স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘যে ক্ষেত্রে কোনো সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অথবা কাউন্সিলরদের অপসারণের জন্য ধারা-১৩-এর অধীন কার্যক্রম আরম্ভ করা হইয়াছে অথবা তাহার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে, সেই ক্ষেত্রে সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে, ক্ষেত্রমতে, মেয়র বা কোনো কাউন্সিলরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে পারিবে।’ এ পরিপ্রেক্ষিতে, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, পিতা মৃত আ. রশিদ, সাং উপশহর, থানা বোয়ালিয়া মহানগর রাজশাহী, এর বিরুদ্ধে অভিযোগের অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হয়েছে বিধায় স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন আইন-২০০৯-এর ১২৯(১) ধারা অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা যেতে পারে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বুলবুলের বিরুদ্ধে নাশকতা ও সহিংসতাসহ বিভিন্ন ঘটনায় বোয়ালিয়া মডেল থানায় চারটি মামলা হয়েছে। এগুলো হল- মামলা নং ৩৮, এটি ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর দায়ের করা হয়। ধারা ১৪৭/১৪৮/১৪৮/১৮৬সহ আরও কিছু ধারা। ২৫ মার্চ আদালত এই মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করে। মামলা নং ৩৭, ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর দায়ের করা হয়। ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানবলী আইনের ৩ ধারায় মামলা হয়। ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এ মামলার চার্জশিট গ্রহণ করে। মামলা নং ৪১, ২০১২ সালের ২২ এপ্রিল মামলাটি দায়ের করা হয়। ধারা ১৪৩/১৫৩/৩৩২/৪২৭/৩৪ দ.বি.। এ মামলায় ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ আদালত মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করে। মামলা নং ০৮, এটি ২০১১ সালে দায়ের করা হয়। ধারা, ১৪৩/১৫২/১৫৩সহ আরও ধারা রয়েছে। ২০১৪ সালের ১০ মার্চ আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেন।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সাত খুনের মামলার প্রধান আসামি নুর হোসেনকে অপসারণ করা হচ্ছে। তবে তাকে অপসারণ করা হচ্ছে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত একটি মামলায়। আদালত তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেন। এ কারণে তাকে কাউন্সিলর পদ থেকে অপসারণ করা হচ্ছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More