অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করা কোনো রাষ্ট্রপতি অবসরভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা পাবেন না। এমন বিধান রেখে নতুন আইন সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।
সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ‘রাষ্ট্রপতির অবসরভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইন, ২০১৫’-এর খসড়াটি উত্থাপন করা হয়।
বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের সময়কে বাদ দিয়ে এই বিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও এইচ এম এরশাদের শাসনামলকে সর্বোচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা করেছেন। ফলে রাষ্ট্রপতির পেনশন অর্ডিনেন্সের সব ধরনের সুবিধার বাইরে থাকছে তাদের পরিবার।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা জানান, এটি ১৯৭৯ সালের আইন। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে সামরিক শাসনের আমলে একটি অ্যামেন্ডমেন্ট হয়েছিল। ২০১৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এটি মন্ত্রিসভায় উঠানো হয়েছিল। মন্ত্রিসভা সেসময় কিছু নির্দেশনা দিয়ে পুনর্গঠন করতে বলেছিল। সে মোতাবেক আজ এটি উত্থাপন করা হলে ভোটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, নতুন এ আইনে উচ্চ আদালত ঘোষিত অসাংবিধানিতভাবে ক্ষমতা দখলকারী রাষ্ট্রপতিরা অবসরভাতা (পেনশন), আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধার আওতায় আসবেন না। তবে স্বাধীনতার পর যেসব রাষ্ট্রপতি পেনশন সুবিধা নেননি তাদের উত্তরাধিকারীরা চাইলে এখন এ সুবিধা নিতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পরিবার কোনো পেনশন সুবিধা নেয়নি বলে জানান তিনি। এখন চাইলে তার পরিবার পেনশন সুবিধা নিতে পারবে।
তিনি আরও জানান, কোনো অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি যদি কোনো কারণে ফৌজদারি অধরাধে অভিযুক্ত হন, তাহলে তিনি পেনশন সুবিধা পাবেন না। এছাড়া রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর কোনো প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করে বেতন ভাতা পাচ্ছেন বা পাইবেন তাহলে তিনি অবসর ভাতার পাবেন না।
মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, নতুন এ আইনে রাষ্ট্রপতিগণ বেতন-ভাতার ৭৫ শতাংশ হারে অবসর ভাতা পাবেন। সে হিআবে বর্তমান রাষ্ট্রপতি ৪৫ হাজার ৯০০ টাকা করে পেনশন ভাতা পাবেন বলেও জানান সচিব।
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, জিয়াউর রহমানের পরিবার এবং এইচ এম এরশাদ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অবসর ভাতা নিচ্ছেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তারা সুবিধা নেননি।