মোসাম্মাৎ নাসরিন। ঝিনাইদহের শৈলকুপার বড়বাড়ি বগুড়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষিকা। বেতন-ভাতার দাবিতে লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে।
রোববার থেকে রোদে পুড়ে, শীতে ভুগে রাস্তায় অবস্থান করতে গিয়ে মঙ্গলবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেন নাসরিন। ধরাধরি করে নেয়া হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই ভর্তি আছেন তিনি।
নাসরিনের মতো আরো ২৬ হাজার ইবতেদায়ি শিক্ষক আন্দোলনে শামিল। কেউ ঢাকায় জমায়েত হয়েছেন, কেউ হননি। তবে সবাই শামিল আছেন আন্দোলনে।
জাতীয় পে-স্কেলে বেতন-ভাতার দাবিতে ‘বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি’র ব্যানারে তারা আন্দোলন করছেন।
এ সংগঠনের মহাসচিব কাজী মো. মোখলেছুর রহমান মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, গত ২৯ বছর ধরে ২৬ হাজার শিক্ষক কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় তারা আন্দোলনে নেমেছেন।
তবে গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন করলেও দাবিপূরণের ব্যাপারে তারা সরকারি মহল থেকে কোনো সাড়া পাননি বলে জানান মোখলেছুর রহমান।
তিনি বলেন, তারা স্ব-উদ্যোগে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চষ্টো করেছেন। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী দেশে না থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
এদিকে এমপিও দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সৃষ্টপদে চাকরিরত শিক্ষকরা করছেন ক্লাস বর্জন কার্যক্রম। ‘নন-এমপিও বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে চলছে ১৫ হাজার শিক্ষকের আন্দোলন।
এই সংগঠনের সভাপতি প্রদীপ চন্দ্র রায় মঙ্গলবার যুগান্তরকে জানান, তারা কোথাও ক্লাস নিচ্ছেন না। এ কারণে ইতিমধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া দারুণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
তিনি রংপুরের কেরানীঘাট স্কুল ও কলেজের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে মোট ২২জন শিক্ষক। তাদের মধ্যে সাতজন সৃষ্টপদে নিযুক্ত। কিন্তু সরকার তাদের এমপিও দেয়নি। এসব শিক্ষকের কর্মবিরতির কারণে প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
শিক্ষক নেতারা জানান, আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে তারা এই কর্মসূচি পালন করবেন।
এর মধ্যে দাবিপূরণের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস ও পদক্ষেপ দেখতে না পেলে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে তারা ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামন আমরণ অনশন শুরু করবেন।