এবার শিক্ষা খাতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে মানবসম্পদ খাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীত করার মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। জানা গেছে, সরকারের পাইপ লাইনে থাকা শিক্ষা খাতে সংস্কারে নেয়া পদক্ষেপ বাস্তবায়নে আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হবে। এর মধ্যে শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে কারিগরি শিক্ষার প্রসার, অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা, সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ, উচ্চশিক্ষা, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, প্রাক-প্রাথমিক এবং একীভূত শিক্ষায় জোর দেয়া উল্লেখযোগ্য।[ads1]
এ প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ অথবা জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দ নিশ্চিত করা জরুরি। শিক্ষা পরিকল্পনা ও বাজেটের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে। শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্দি ও শিক্ষা বরাদ্দের অগ্রাধিকার চিহ্নিত করতে হবে। তিনি বলেন, প্রাথমিক স্তর অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত এবং মাধ্যমিক স্তর দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সম্প্রসারিত হওয়ায় এ দুই স্তরের সুব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বিশেষ অন্তর্বর্তী কর্মসূচি নিতে হবে।
অধ্যাপক কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ গত দুটি বাজেটে যেভাবে কমেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয় এবং অনাকাক্সিক্ষত। আসন্ন বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ আগের বছরগুলোর মতো ২.০২ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষাকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এর জন্য বিশেষ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।[ads2]
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, শিক্ষা ক্ষেত্রে চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী নিজেও বাজেট বাড়াতে আগ্রহী হয়েছেন। প্রথম শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পাঠদান পদ্ধতি ও অবকাঠামো নির্মাণের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষা খাতে মোট বাজেট হিসেবে বরাদ্দ কমেছে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। তবে আগামী অর্থবছরে শিক্ষা খাত সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে। প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সর্বস্তরে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত কমিয়ে আনা হবে। মূলধারার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মাদরাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী বিষয়গুলো গুরুত্ব দেয়া হবে। জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে বেশকিছু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হতে পারে। এতে শিক্ষক-কর্মচারীদের ভাগ্য পরিবর্তন হতে যাচ্ছে।
গত পাঁচ অর্থবছরের বাজেটে কেবল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কেবল ২০১৩-১৪ অর্থবছর ছাড়া প্রতিবারই মোট বাজেটের অনুপাত শিক্ষায় বরাদ্দ আগের বছরের তুলনায় কমেছে। ২০১০-১১ অর্থবছর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত এ মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল মোট বাজেটের যথাক্রমে ৭ দশমিক ৮৬, ৬ দশমিক ৯৪, ৬ দশমিক ৪৫, ৭ দশমিক ৫১, ৬ দশমিক ২০ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়। এর আগের বছর শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে মোট বাজেটের ১৩ দশমিক ১ শতাংশ রাখা হয়েছিল।[ads2]
Prev Post