গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারিতে পাঁচ বন্দুকধারী হামলা চালায়। এতে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জিম্মিকে হত্যা করা হয়। তবে এই ২০ জিম্মির সবাইকে বন্দুকধারী জঙ্গিরা হত্যা করেনি। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতেও এক জিম্মির মৃত্যু হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন পুলিশের এক উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা। [ads1]
সেনা কমান্ডোদের গুলিতে পাঁচ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছিল হলি আর্টিসান বেকারিতে। একজনকে জীবিত অবস্থায় ধরা হয়। অবশ্য পরে জানা যায় জীবিত অবস্থায় গ্রেপ্তার হওয়া ওই যুবক হলি আর্টিসান বেকারির কর্মচারী, তার নাম জাকির হোসেন শাওন।
এদিকে জঙ্গিদের ছাড়াও ২০ জনের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল রেস্টুরেন্টের ভিতরে। ধরে নেয়া হয়েছিল, তাদের সবাইকেই জঙ্গিরাই খুন করেছে। কিন্তু উচ্চপর্যায়ের এক পুলিশ কর্মকর্তা মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ওই ২০ জনের মধ্যে ১৯ জনকে জঙ্গিরা খুন করেছিল। একজনের মৃত্যু হয়েছে কমান্ডোদের গুলিতে। তার নাম সাইফুল ইসলাম চৌকিদার।
তিনি হলি আর্টিসানের বাবুর্চি ছিলেন। বানাতেন পিৎজা। তাকেও জঙ্গিরা জিম্মি করেছিল। জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ে সাইফুলকে জঙ্গি ভেবে গুলি করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। তাতেই তার মৃত্যু হয়। সাইফুলের বাড়ি ছিল শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কুলিকাঠি গ্রামে। [ads2]
গুলশানে জঙ্গি হামলায় নিহত সাইফুল ইসলামের মৃত্যু সম্পর্কে জানতে চাইলে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম আলী বাংলামেইলকে বলেন, ‘জঙ্গি হামলায় যে ২২ জন মারা গেছে তাদের নাম ও তথ্য থানায় আছে। যে ৬ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে তাদের নামের সাথেও সাইফুল ইসলামের কোনো মিল নেই। হয়তো আহত হয়ে সাইফুল ইসলাম অন্যত্র মারা গেছেন।’
এদিকে পরিবার জানায়, এক বছর আগে মৃত হাসেম চৌকিদারের একমাত্র ছেলে সাইফুল ইসলাম চৌকিদার বাবুর্চির চাকরি নেন রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে। সাইফুল এর আগে জার্মান প্রবাসী ছিলেন। সেখানেও তিনি রেস্টুরেন্টে পিৎজা তৈরির কাজ করতেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। সবার সঙ্গে এবার ঈদ করারও কথা ছিল তার।[ads2]
সাইফুলের বড় মেয়ে সামিয়া (৯) কান্না জড়িত কণ্ঠে বাংলামেইলকে বলে, ‘আমার বাবা আমার জন্য ও আমার ছোট বোন ইলমির জন্য ঈদের জামা নিয়া আসবে। আমার বাবাকে কারা যেন কুপিয়ে মেরে ফেলছে। ওরা কেন মারলো? কে আমার ঈদের জামা দিবে?’ নিহতর ছোট মেয়ে ইলমি (৭) শুধুই এদিকওদিক তাকিয়ে থাকে। মুখে কোনো ভাষা নেই তার।