শিল্পমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বলেছেন, গ্রেনেড হামলা করার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী নেতৃত্বকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বেঁচে আছেন, আমরা বেঁচে আছি। ষড়যন্ত্র থেমে নেই। এখনও প্রধানমন্ত্রীর প্রাণনাশের হুমকি চলছে। এখনও তার ওপর আঘাত আসছে। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, এখনো আমাদের দেশে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিকৃত কথা বলা হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের এবং রাজনৈতিক দলের মধ্য যারা সরাসরি গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল তাদেরকে বঙ্গবন্ধু কন্যা আদালতের কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে বিচার করছেন। তাদের সংগঠনগুলি বসে নেই, তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা শেখ হাসিনাকে ১৯ বার প্রাণ নাশের চেষ্টা করেছে। তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ছিল বলেই আমরা উন্নয়নের দিকে এগুতে পেরেছি। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত আমাদের যে ধরনের সহযোগিতা করেছে নতুন প্রজন্মের কাছে তা তুলে ধরতে হবে। এসময় তিনি দুই দেশের যোগাযোগের সুবিধার্থে ভারতীয় হাইকমিশনে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বেঞ্চ বসানোর জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহবান জানান। বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদের সভাপতি এম এ বারির সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক প্রদীপ ভট্টাচার্য, ভারতের সাবেক মন্ত্রী সরদার আমজাদ আলী, সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ, বাংলাদেশ ব্যাংকের চিফ ইকোনোমিস্ট ড. বিরুপা পাল, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বাসেত মজুমদার প্রমুখ। অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সভা সমাবেশে গেলে বোঝা যায়, দু’টি দেশের সম্পর্ক একাকার হয়ে আছে। অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু ভারতের সাথে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক নয়, দুই দেশের জনগণের সাথে জনগণের সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে। অধ্যাপক প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়ক সমস্যার সমাধান বের করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ভারতের এই ‘কনফিডেন্স’ (আত্মবিশ্বাস) নিয়ে আসার দরকার আছে যে, ‘তোমাদের ব্যথার জায়গাতে আমরা আছি, আমরা তোমাদের পাশে আছি।’ তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ যদি এভাবে এগুতে থাকে তাহলে বিশ্বের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এসময় তিনি দুই দেশের ভিসা ব্যবস্থা আরও সহজ করতে উভয় দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সরদার আমজাদ আলী বলেন, উন্নয়নের সম্প্রীতি দুই দেশকেই মনে রাখতে হবে। দুই দেশের অনেক সমস্যা থাকতে পারে, সেই সমস্যার সমাধান অস্ত্রের ঝনঝনানি দিয়ে নয়, পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে ও নিজের সমস্যা হিসেবে অনুধাবনের মাধ্যমেই হতে হবে। সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির মধ্য দিয়ে দু’টি দেশের সমস্যা সমাধান করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।