সংসদে উত্থাপিত সংসদ সদস্যদের বেতন সংক্রান্ত বিল নিয়ে আপত্তি উঠেছে সংসদীয় কমিটিতে। কমিটির সদস্যদের মতে তাদের প্রস্তাবিত সম্মানিভাতা একজন সচিবের চেয়েও কম। সে কারণে এমপিরা আমলাদের চেয়ে বেশি বেতন দাবি করেছেন।
আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আজ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্দোলনে নামেন। এরপর শুরু হয়েছে কলেজ শিক্ষকদের আন্দোলন। এদিকে আন্দোলনে না গেলেও আমলাদের চেয়ে নিজেদের বেতন-ভাতা বেশি চান এমপিরা। বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত মঈন উদ্দিন খান বাদল ও ইমরান আহমেদ এই বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।
সুরঞ্জিত বলেন, এমপিদের যথাযোগ্য সম্মান দিতে হবে। তাদের মর্যাদাটা তো রাখতে হবে। আমলাদের নিচে তো এমপিরা থাকতে পারেন না?
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীদের ভাতা সংক্রান্ত বিল পাসের জন্য পাঠিয়েছি। তবে এমপিদের ভাতার বিষয়ে আনীত বিলটিতে কিছু আপত্তি রয়েছে। এই বিলে দু’জন সদস্য আপত্তি তুলেছেন। তাই আমরা বিলটি ফেরৎ পাঠিয়ে দিয়েছি । আমরা বলে দিয়েছি এগুলো তোমরা ঠিক করে আনো। এ জন্য আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি একটি সিরিয়াস বৈঠক করতে হবে। অর্থমন্ত্রীকে বৈঠকে ডাকা হবে।
তিনি বলেন, আমলাদের বেতন বাড়তে বাড়তে ৮৬ হাজার হয়েছে। আর সংসদ সদস্য এমপিদের ভাতা ৫৫ হাজার টাকা। এখানে অজুহাত দেখানো হয়েছে, এমপিরা তো বেতন নেন না, রিমুনারেশন (ভাতা) নেন। রিমুনারেশন তো রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীও নেন। তাদের যুক্তি রাষ্ট্রপতি হলেন প্রজাতন্ত্রের সবার উপরে, তাই তার বেতন এক নম্বরে রাখা হয়েছে। তাই যদি হয়, তাহলে তো ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্স (মর্যাদাক্রম) অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের প্রতিনিধি হিসেবে এমপিদের মর্যাদা আমলাদের চাইতে উপরে।
তিনি বলেন, এ জন্য আপত্তি তুলে এমপিরা বলেছেন রেমুনারেশন যদি নেই, তাহলে এক টাকা দিলেও সমস্যা নেই, তবে মর্যাদা তো তাদের (আমলাদের) উপরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, এমপিদের ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব করলেও অন্যান্য ভাতা যেমন মেডিকেল, সিটিং ভাতা, কমিটিতে উপস্থিতিতে ভাতা, যাতায়াত ভাতা- এগুলোর একটিও বাড়েনি। সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেন, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকার বিষয়গুলো দেখার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে বৈঠকে অংশ নেন, কমিটির সদস্য মো. শামসুল হক টুকু, অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউল হক মৃধা ও সফুরা বেগম। এছাড়াও বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সংসদ সদস্য মঈনউদ্দিন খান বাদল ও কামরুন নাহার জলি।
Prev Post
Next Post