প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সীমান্ত সংলগ্ন আরাকান তথা রাখাইন প্রদেশের মংডুতে আবারও পোলিও ভাইরাসে আক্রান্ত শিশু রোগীর সন্ধান পেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ৭ মাসের ব্যবধানে আরাকানের পোলিও ভাইরাস সনাক্ত হওয়ায় প্রায় পোলিও মুক্ত বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় সরকার ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বিশেষ সতর্ক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সীমান্ত সংলগ্ন উখিয়া, টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বছরের কম বয়সী এক লাখের বেশি শিশুকে বিশেষ ইপিআই ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে টিকা প্রদান করা হচ্ছে।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চলের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কয়েকটি পোলিও ভাইরাস আক্রান্ত রোগী সন্ধান পেয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যৌথভাবে মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় মংডু জেলার সীমান্ত সংলগ্ন উখিয়া, টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ ইপিআই কার্যক্রম শুরু করেছে।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. কমরুদ্দিন বলেন, প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত অঞ্চলের শিশু ঘাতক পোলিও ভাইরাসের সন্ধান পাওয়ায় স্বভাবতই আমরা উদ্বিগ্ন। সীমান্ত এলাকায় আামদের শিশুদের নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ এবং পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশুকে বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে শনিবার বিশেষ টিকা প্রদান করা হয়েছে। রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত এসব এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে স্বাস্থ্য কর্মীরা তল্লাশি চালাবে যাতে কোন শিশু বিশেষ টিকা কার্যক্রম থেকে বাদ না পড়ে। ব্যাপক নিবিড় তল্লাশি অভিযানের মাধ্যমে বাদ পড়া সব শিশুকে ২৭ জানুয়ারি বিশেষ টিকা ক্যাম্পের মাধ্যমে টিকা প্রদান করা হবে।
২১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ বুলেটিনের মাধ্যমে জানা গেছে, মিয়ানমারের আরাকানের মংডু জেলার একই গ্রামে প্রায় ৭ মাসের ব্যবধানে ২ জন পোলিও ভাইরাস আক্রান্ত শিশু রোগী সনাক্ত করা হয়। এসব আক্রান্তদের আলামত সংগ্রহ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিজস্ব পরীক্ষাগারে নিবিড় পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ শেষে গত নভেম্বরে পোলিও ভাইরাস আক্রান্তের তথ্য নিশ্চিত করা হয়। সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের এপ্রিলে ২৮ মাস বয়সী এবং ৫ অক্টোবর ১৬ মাস বয়সী শিশু ২টির শরীরে Acute Flaccid Paralysis বা AFP ভাইরাস বা রোগ ধরা পড়ে।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন জানান, উখিয়ায় ১৫৩টি টিকা কেন্দ্রের মাধ্যমে ৪২ হাজার, টেকনাফের ১৫৪টি টিকা কেন্দ্রর মাধ্যমে ৬০ হাজার ২টি শরনার্থী শিবিরে ২৮টি টিকা কেন্দ্র এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় শতাধিক টিকা কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রায় ৩০ হাজার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিশেষ টিকা ক্র্যাশ কর্মসূচির আওতায় আনা হচ্ছে। সরকারের বিশেষ নজরদারীতে সারা দেশের মধ্যে মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন উখিয়া, টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় এ ব্যবস্থা নেয়া হবে।