লন্ডনে নিজের ওপর হামলা প্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ থেকে সদ্য অবসরে যাওয়া বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি বলেন, ‘আমি মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলার রায় দিয়েছি। জামায়াত-নেতা সাঈদীকে তো আমি ছাড়া আর কেউ ফাঁসি দেননি। এ কারণে জামায়াতও আমার ওপর টার্গেট করে।’ একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ‘এই হামলার সঙ্গে জামায়াত-শিবিরও জড়িত।’ গত ২১ অক্টোবর অবসরে যাওয়া বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক লন্ডনের বেথনাল গ্রিন ইয়র্ক হলে শারদীয় দুর্গোৎসবের নবমী পূজা পরিদর্শন শেষে গাড়িতে ওঠার আগে হামলার শিকার হন। এ সময় তার সঙ্গে তার মেয়েও ছিলেন।ওই দিনই তিনি ঢাকা থেকে লন্ডন পৌঁছেন। বিচারপতি মানিক তার ওপর হামলার বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘হামলাকারীরা আমাকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমার মেয়ের প্রতিরোধ এবং পূজা কমিটির লোকজন এগিয়ে আসায় তারা ব্যর্থ হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, ‘ঘটনার পর পরই পুলিশ আসে এবং তারা এই হামলার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। বিচারপতি মানিক জানান, ‘আমি লন্ডনে আসার কয়েকদিন আগে ঢাকায় একটি বেসরকারি টেলিভিশনে বলেছিলাম, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ করেছেন এমন কোনও প্রমাণ নেই। তিনি মূলত পাকিস্তানিদের খবরাখবর দিতেন। আর প্রত্যেক সেক্টর কমান্ডারের মুক্তিযুদ্ধের তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধ করার ব্যাপারে কোনও তথ্য নেই। তিনি ছিলেন একজন পাকিস্তানপত্নী। আর এরপর থেকেই আমার ওপর হামলার পরিকল্পনা হয়। তিনি বলেন, ‘এছাড়া, আমি মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলার রায় দিয়েছি। জামায়াত-নেতা সাঈদীকে তো আমি ছাড়া আর কেউ ফাঁসি দেননি। এ কারণে জামায়াতও আমার ওপর টার্গেট করে।’ বিচারপতি মানিক বলেন, ‘২০১২ সালের ২৭ জুন আমার ওপর লন্ডনে আরও একবার হামলা হয়েছিল। সেই হামলা অত বড় ছিল না। তবে এবার আমাকে মারপিট করে মাটিতে ফেলে অপহরণের চেষ্টা করা হয়।’ ২০১২ সালে হামলার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি তাহের হত্যা মামলার জাজমেন্টে বলেছিলাম জিয়াউর রহমান ছিলেন ঠাণ্ডা মাথার খুনি। তিনি বিচারের আগেই তাহেরকে হত্যা করেন। জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। এরপর থেকে বিএনপির লোকজন আমি লন্ডনে আসলেই আমাকে ধাওয়া করত।’ বিচারপতি মানিক জানান, তিনি এখন বাসায়ই বিশ্রাম নিচ্ছেন। তবে এখনও পুরোপুরি সুস্থ নন। আর তার নিরাপত্তার ব্যাপারে লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাস ব্যবস্থা নিয়েছে।