সাইদীকে ফাঁসির রায় দেয়া বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক অসরকালীন সময়ে রায় লিখে নিজেই করেছেন গুরুতর সাংবিধানিক অপরাধ। যার শাস্তি মৃত্যুদন্ড!
অতিসম্প্রতি প্রধান বিচারপতি জনাব এস.কে সিনহা অবসরকালীন সময়ে রায় লেখাকে সংবিধানের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ‘অবসর গ্রহণের পর বিচারকগণের অক্ষমতা’ শিরোনামে সংবিধানের ৯৯(১) ধারার বিধান রয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, “উক্ত পদ (বিচারক) হইতে অবসর গ্রহণের বা অপসারিত হইবার পর তিনি কোন আদালত বা কোন কর্তৃপক্ষের নিকট ওকালতি বা কার্য করিবেন না”।
এই বিধানের ব্যাখ্যায়, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র একজন আইনজীবী নিজের নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, ‘এখানে দুটি কাজকে ‘করিতে পারিবেন না’ বলে স্পষ্ট নির্দেশনা আছে।
দুটির মধ্যে দ্বিতীয়টি হচ্ছে আদালতের কোন কার্য করিতে পারিবেন না অর্থাৎ আদালতের কোন মামলার রায় লেখা সহ যেকোন কাজ।
যদি তিনি করেন তাহলে সংবিধানের এই ধারা লঙ্ঘনের দায়ে ৭(১)ক ধারা এর উপধারা ‘খ’ মোতাবেক ৯৯(১) ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে বিবেচিত হইবেন।
আর এর ফলে সেই ব্যক্তি ৭(৩) ধারা মোতাবেক প্রচলিত আইনের মধ্যে সর্বোচ্চ দন্ড অর্থাৎ মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হবে।’
আলোচিত ধারা দুটি স্বচিত্র আকারে নিচে দেয়া হল-
‘বিচারপতি মানিক সুস্পষ্টভাবে ৯৯(১) ধারা লঙ্ঘন করে সাইদীর রায় লিখেছেন। এর ফলে তার বিরুদ্ধে যেকোন সময় সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে যেকেউ মৃত্যুদন্ডের আবেদন করতে পারবেন’ বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে একটি বেসরকারী টিভি টকশোতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মানিক নিজেকে ‘সকল সময়ে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক’ হিসেবে মন্তব্য করে আলোচিত হন।
ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা এবং বিচারপতি থেকে অবসর গ্রহণের পর সরকার দলীয় সক্রিয় কর্মীর ভূমিকায় ফেরত এসে মূলত একজন সক্রিয় রাজনীতিক হিসেবেই প্রমাণ রেখেছেন তিনি।
এর আগে মাওলানা সাইদীর বিতর্কিত রায়ে বিচারপতি মানিক অন্যান্য বিচারপতিদের মতামতের বাইরে গিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। যেসময় বাকি বিচারকগণ তার যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন।
সাইদীর রায়কে কেন্দ্র করে সেসময় সারা দেশে জনতার মাঝে প্রবল সরকার বিরোধীতা দেখা দেয়।
মানিকের অবসরের পর সম্প্রতি আবারও সেই রায়কে ফাঁসিতে পরিবর্তন করতে সরকারী আপিল উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।