ঢাকা: দুর্বৃত্ত দমন ও শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরতে যৌথবাহিনী ও র্যাবের চালানো অভিযানের সময় সংঘর্ষে ৭ জন নিহত হয়েছে। রোববার রাত ও সোমবার ভোরে সাতক্ষীরা ও লক্ষ্মীপুরে এসব নিহতের ঘটনা ঘটে। সাতক্ষীরায় নিহতের মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলার সাতানি গ্রামের আব্দুল আহাদের ছেলে জামায়াতকর্মী জাহাঙ্গীর (২৫), দেবহাটা উপজেলার পাকিস্তানপাড়ার আবদুর রউফ (৩২) ও রিয়াজুল ইসলাম (৩৫)।. অপর দুজনের পরিচয় জানা যায়নি। লক্ষ্মীপুরে নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের জামিরতলী গ্রামের আসাদুজ্জামান বাবুল (৩৫)) ও তার সহযোগী একই এলাকার খোরশেদ আলম সুমন (৩২)।
এদিকে, সাতক্ষীরায় যৌথবাহিনীর অভিযানে নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াত। সোমবার দুপুরে জেলা জামায়াতের অরগানাইজিং সেক্রেটারি (সাংগঠনিক সম্পাদক) মাওলানা আজিজুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ হরতালের আহ্জান জানিয়েছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন- সাতক্ষীরা: রোববার রাত ১০টার দিকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ-বিজিবির সমন্বয়ে দুর্বৃত্ত দমনে অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী। অভিযানের সময় আগরদাড়ি এলাকায় গেলে সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে ও সড়ক বিচ্ছন্ন করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। পুলিশ গাছের গুড়ি সরিয়ে সামনে যেতে চাইলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই জামায়াত কর্মী জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়।
পরে রাত ২টার দিকে যৌথবাহিনীর অপর একটি দল সদর উপজেলার পদ্মশাঁখরা এলাকায় অভিযান চালায়। সেখানেও যৌথবাহিনীর সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
অপরদিকে, ভোর ৪টার দিকে দেবহাটা উপজেলার সখীপুর এলাকায় অভিযানকালে যৌথবাহিনী সখীপুর বলফিল্ড এলাকায় পৌঁছলে সেখানেও হামলা চালায় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। এ সময় যৌথবাহিনীর গুলিতে উপজেলার পাকিস্তানপাড়ার আবদুর রউফ (৩২) ও রিয়াজুল ইসলাম (৩৫) নিহত হন।
এসব সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সাতক্ষীরাকে শান্ত না করা পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। দিকে, যৌথবাহিনীর অভিযানে নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াত। সোমবার দুপুরে জেলা জামায়াতের অরগানাইজিং সেক্রেটারি (সাংগঠনিক সম্পাদক) মাওলানা আজিজুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুরে: গোপন খবরের ভিত্তিতে রোববার দিনগত রাতে র্যাবের একটি টিম জামিরতলী গ্রামে তালিকাভুক্ত শীর্ষ বাবুলকে ধরার জন্য অভিযান চালায়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে বাবুল ও তার সহযোগীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করে। র্যাবও পাল্টা গুলি করে। গোলাগুলির একপর্যায়ে র্যাবের গুলিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে আসাদুজ্জামান বাবুল ও খোরশেদ আলম সুমন ঘটনাস্থলে নিহত হন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) লোকমান হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বাবুল ও খোরশেদ তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। বাবুল সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান নূর হোসেন শামীম হত্যা মামলার প্রধান আসামি। এছাড়া হত্যা, খুন ও চাঁদাবাজিসহ ৭/৮টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।